দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী : রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার খামারমাগুরা গ্রামের আছিরন বেগম ওরফে পাঁচকানি মৃত্যুবরন করেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১৩০ বছরের বেশি। ১ মে সোমবার রাত ১১ টায় মৃত্যুরবন করেন আছিরন বেগম। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বুকে চাপা কষ্টগুলো নিয়েই চলে গেছেন আছিরন বেগম। মৃত্যুর শেষ দিকে বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় তার পাঁশে দাড়িয়েছিল। বৃদ্ধাশ্রমে নিয়ে যাবার প্রস্তাব করেছিল আছিরন বেগমকে। কিন্তু এমন প্রস্তাবে আছিরন বেগম উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে বলেন আমি সাধারন মানুষের সাথেই শেষদিন থাকতে চাই। বৃদ্ধাশ্রম কোন মানুষের ঠিকানা হতে পারে না।

মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত কষ্ট করে দিনে পাঁচ-দশ বাড়ি গিয়ে জীবিকা চালাতেন আছিরন। মৃত্যুর আগে ক্ষোভ জানিয়েছিল আছিরন বেগম তিনি বলেছিলেন, “ স্যারেরা আমার বয়স বিশ্বাস না করে কম বয়স বসিয়েছিল।” সংবাদ সংগ্রহের সময় এই বয়স নিয়ে স্থানীয়রাও ক্ষোভ জানিয়েছিল। জাতীয় পরিচয় পত্র অনুয়ায়ী বয়স হয়েছিল ১০৯ বছর ৩ মাস ১৩ দিন।

বাবা-মা নিজ হাতে বিয়ে দেয় আছিরন বেগমকে কিন্তু বিয়ের অল্প দিনেই বাবা-মাকে হাঁরিয়ে এতিম হয়ে যায় আছিরন বেগম কিন্তু নির্মমতা সেখানেই শেষ নয় এর কিছুদিন পরেই কলেরায় মৃত্যু হয় নিঃসন্তান আছিরনের স্বামী জনি উদ্দিন মোল্যার।

মঙ্গলবার সকাল ১০টার নামাজের জানানা শেষে খামারমাগুরা গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। তার মৃতুতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ ইউছুপ শেখ জানান, “আছিরন আর কোনদিন কারো বাড়ীতে গিয়ে খোঁজ-খরব নেবে না। আমাকে আর কোনদিন বলবে না বয়স্ক ভাতার টাকা কবে দিবে, এতে তো চলে নারে মেম্বার।”

আছিরন বেগমের মৃত্যুতে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

(ডিবি/এএস/মে ০২, ২০১৭)