কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের সংগ্রামপুর গ্রামে সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ঘিরে আসামীদের বাড়িগুলো এখন শুন্য ভিটা হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। নারী-পুরুষ ও শিশুসহ মানব শুন্য বাড়িগুলো যেন আতংকের জনপদে রুপ নিয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে থাকা পুরুষগুলোর বাড়ির দিকে ঘুরে তাকানোরও সাহস পাচ্ছে না গৃহবধুসহ অন্য সদস্যরা। এলাকার প্রভাবশালী পরিবারের ছেলে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ায় আসামীদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাট হলেও পুলিশও যেন নীরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে।

এলাকাবাসী ও লুটপাটের শিকার পলাতক আসামী পরিবারদের অভিযোগ নিহতের পরিবার ও তাদের আত্মীয় স্বজনরা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর আসামী এনামুল, হায়দার, ইয়ামিন, মিতালী, নরশেদ আলী, নিলু, লালুম হামজা, ইলিয়াস, আনু ও আবু হোসেনের বাড়িতে হানা দিয়ে বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে বাড়ির গরু ও ছাগলসহ ঘরের যাবতীয় সম্পদ সম্পদ লুট করে নেয় এবং তা অব্যাহত রেখেছে।
এছাড়াও আসামীদের বাড়ির আঙিনায় লাগানো আম-কাঁঠাল পেড়ে নেয়াসহ মূল্যবান বিভিন্ন প্রজাতির গাছও কেটে সাবাড় করা হচ্ছে বলে আসামী পক্ষের লোকজন অভিযোগ করেছেন। হত্যা মামলার প্রধান আসামী এনামুলের স্ত্রী শিরিন আক্তার জানান, হত্যাকাণ্ডের সাথে তার স্বামীর কোন সম্পৃক্ততা নেই। অথচ তাকে প্রধান আসামী করা হয়েছে এবং আমার বাড়িতে হামলা করে বাড়ির সমস্ত সম্পদ লুট করা হয়েছে। সেই সাথে বাড়ি-ঘর ভেংগে সমান করে দেওয়া হয়েছে। একই অভিযোগ করে কুয়েত প্রবাসীর স্ত্রী নার্গিস আক্তার। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে দৌলতপুর থানার ওসি রাশেদুল ইসলাম জানিয়েছেন, পুলিশের উপস্থিতিতে সেখানে কোন আসামীদের বাড়ি-ঘর লুট বা ভাংচুর করা হয়নি। একটি হত্যাকান্ড ঘটলে সেখানে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এ মামলার ৩ জন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। তবে নিহতের ভাই মামলার বাদী সাইদুল ইসলামসহ তার পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, যারা পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা দরিদ্র জনগোষ্ঠী। আসামীরা বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাটের যে অভিযোগ করেছেন তা ঠিক না।
উল্লেখ্য, গত ১৮জুন বিকেলে উপজেলার রিফায়েতপুর ইউনিয়নের সংগ্রামপুর গ্রামে নছিমন চুরি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সাইফুল ইসলামকে তার প্রতিপক্ষ নওশের আলী ধারাল হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় হত্যাকারীকে বাঁধা দিতে গিয়ে আকরাম হোসেন ও শহিদুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়। তারা রাজশাহী ও ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্য ঘাতক নওশের আলীকে প্রধান আসামী না করে এনামুলকে প্রধান আসামী করে ১৫জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫/৭জনকে অজ্ঞাত আসামী করে নিহতের ভাই সাইদুল ইসলাম বাদী হত্যা মামলা করে। যার ফলে গ্রেপ্তার এড়াতে এলাকা এখন জন শুন্য। আর এ সুযোগে সুযোগ সন্ধানী নিহতের পরিবার বা তাদের আত্মীয় স্বজনরা আসামীদের বাড়ি-ঘরে চালাচ্ছে লুটপাট।
(কেকে/এএস/জুন ২১, ২০১৪)