পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আবাসিক ও কল কারখানায় চট্টগ্রাম বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেড ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিভিশন লিমিটেডের কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারীর যোগসাজশে শতাধিক অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে সরকারি কোটি কোটি টাকার জ্বালানী সম্পদ নষ্ট করছে।

প্রশাসন নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করেছে। অবৈধ গ্যাস সংযোগের কারণে বৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে নিয়মিত গ্যাস না পাওয়ায় হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে।
জানা যায় পটিয়া উপজেলা ও কর্ণফুলী এলাকায় গ্যাস কোম্পানী ও গ্যাস পাম্প মালিকের সহযোগিতায় প্রতিরাতে ট্রাক করে দক্ষিন অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করা হয়। একটি আর্ন্তাজিক গ্যাস পাচারকারী চক্র মার্য়ামা,থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে এ পাম্প থেকে গ্যাস পাচার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছেন। আর্ন্তাজাতিক গ্যাস পাচারকারীরা যে সব পাম্প থেকে গ্যাস নেয় নিয়মিত এসব পাম্পগুলো হলো মইজ্যার টেক এলাকার কামাল এন্ড ব্রাদার্স সিএনজি গ্যাস পাম্প,ফসিল সিএনজি গ্যাস পাম্প, নয়াহাট শাহ আমানত গ্যাস পাম্প, গৈড়লা গ্যাস সিএনজি গ্যাস পাম্প গ্যাস পাচারকারী চক্রের সাথে জড়িত রয়েছে বলে পুলিশের অভিযোগ।
অন্যদিকে পটিয়া পটিয়া পৌর সদরের ৪ নং ওয়ার্ড এলাকার রুপন কান্তি শীল এর লাইন থেকে রাতের আঁধারে জোরপুর্বক কার্তিক চন্দ্র শীলের পুত্র তপন কান্তি শীল, প্রীতি রানী শীল, মুন্নী শীল, তিলকী শীল প্রকাশ প্রতিমা শীলসহ তিনটি পরিবার অবৈধাবে গ্যাস সংযোগ নেয়। এ ঘটনায় লিখিত ভাবে চট্টগ্রাম বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেড ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিঃ লিখিত অভিযাগকরেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। কর্ণফুলী গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশনের ব্যবস্থপনা পরিচালক মীর আবদুল মতিন নিকট গত ১২ জুন, উপ-মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয়া মোহাম্মদ আলীর নিকট গত ১৯ জুন লিখিত রুপন কান্তি শীল অভিযোগ দিয়ে কোন কাজ হয়নি।
পটিয়া ইন্দ্রপুল লবন শিল্প এলাকায় মিলগুলোতে দীর্ঘ দিন ধরে গ্যাস কোম্পানীর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীর সাথে হাত করে দুই চুল্লির অনুমোদন নিয়ে ৫/৮ চুল্লি দিন রাত জ্বালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন পটিয়া লবন মিলের শ্রমিক মোহাম্মদ আলী, আবদুল করিম, আবার অনেক বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে আবাসিক অনুমোদন নিয়ে বানিজ্যিক কার্যক্রম চালাছে।
গত ১৮ জুন পটিয়া উপজেলার শিকলবাহা কামাল সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস চুরি করে পাচার করার সময় সিএনজি স্টেশনের কর্মচারীর সহযোগীতায় দুই পাচারকারীকে পুলিশ আটক করেছে। আটককৃত পাচারকারীরা হলেন, লোহাগাড়া উপজেলার ব্রজ হরিনাথের পুত্র বাবুল কান্তি দাশ (৩৬), একই উপজেলার বলিবাড়ীর এলাকার আবদুল মজিদের পুত্র মোহাম্মদ ইলিয়াছ (৩৫)। এ সময় দুই পাচারকারী পালিয়ে যায়। গতকাল (বুধবার) মধ্যরাতে কর্ণফুলী থানা পুলিশ গ্যাস পাচার কাজে ব্যবহৃত ট্রাক মৌলভীবাজার-ট-০০৮৯ সহ উক্ত দুই পাচারকারীকে আটক করে। এদিকে পুলিশ নিয়মিত মামলা রেকর্ড না করে পাচারকারীদের পটিয়া ভ্রাম্যমান আদালতে পাঠিয়ে দেয়।
এব্যাপারে কর্ণফুলী ফসিল সিএনজি গ্যাস পাম্পের ম্যানেজার এনামুল করিম অবৈধ গ্যাস পাচারের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার গ্যাস পাচার করিনা তবে অন্য পাম্পের মালিকরা বিভিন্ন এলাকারয় অবৈধভাবে গ্যাস সরবরাহ করে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এব্যাপারে পটিয়া পৌর সদরের রুপন শীল বলেন, আমি অবৈধভাবে গ্যাস লাইন নেয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে অভিযোগ করেও কোন ধরনের সহযোগিতা পায়নি গ্যাস কোম্পানির একটি চক্র আমি অভিযোগ করায় আমাকে ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছে।
এব্যাপারে পটিয়া কলেজন বাজার হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ অরুণ দেওয়ানজী বলেন, চট্টগ্রাম –কক্সবাজার মহসড়ক দিয়ে পটিয়ার গ্যাস পাম্প থেকে অবৈধভাবে গ্যাস নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পাচার করে একটি চক্র তবে ইতি মধে অনেকে গ্রেফতার হয়েছে।
এব্যাপারে কর্ণফুলী গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানির কর্মকর্তা প্রকৌশলী এস এম মোরশেদ বলেন, আমার অভিযোগ পাওয়ার অবৈধ গ্যাস সংযোগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে পটিয়ার শীল পাড়ার বিষয়টি আমার হাতে এখনো আসেনি হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(এনআই/এএস/জুন ২১, ২০১৪)