টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নিখোঁজের দুই দিন পর প্রতিবেশীর রান্নাঘরের মেঝে খুঁড়ে আনোয়ারা বেগম(৫৫) নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রবিবার(৭ মে) রাত ১০টার দিকে উপজেলার আনাইতারা ইউনিয়নের পাঁচদানা গ্রামের মোছলেম উদ্দিনের রান্না ঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুই নারীসহ ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।

আটককৃতরা হচ্ছেন, পাঁচদানা গ্রামের মোছলেম উদ্দিনের স্ত্রী মমতাজ বেগম (৪৫), তার দুই ছেলে ইব্রাহীম (২০) ও শাকিল মিয়া (১৮), কবীরের স্ত্রী রাশেদা বেগম (৪০), ছেলে লাবু শিকদার (১৮) ও রাশেদার ভাই হাবিবুর রহমান হাবু (৩৫)।

নিহত আনোয়ারা বেগমের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন। তিনিও ঢাকায় থাকেন। বাড়িতে মা একা থাকার কারণে মায়ের সঙ্গে দিনে কয়েকবার ফোনে কথা হত। কিন্তু শনিবার(৬ মে) ও রোববার(৭ মে) মাকে ফোনে না পাওয়ায় ঢাকা থেকে তিনি বাড়ি আসেন।
বাড়িতে এসে মা আনোয়ারা বেগমের খোঁজ না পেয়ে রোববার সন্ধ্যায় মির্জাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করেন এবং এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা কিছু তথ্য পুলিশকে দেন। পরে পুলিশ রাতেই পাঁচদানা গ্রামে গিয়ে মমতাজ বেগমের রান্না ঘরের ভেতরে মেঝেতে পুঁতে রাখা মরদেহটি মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী আটক মমতাজ বেগম জানান, নিহত আনোয়ারা বেগমের সঙ্গে চাচাত ভাই মৃত কবীর হোসেনের পরিবারের দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছিল। শনিবার(৬ মে) মমতাজ বেগম ও আনোয়ারা বেগম ধানখেতের আইলে শাক তুলছিলেন। এসময় আনোয়ারার চাচাতো ভাই মৃত কবীরের ছেলে বাবুল সিকদার ও লাবু শিকদার বৃদ্ধা আনোয়ারাকে ডেকে তার (মমতাজের) বাড়িতে নেয়।

সেখানে আনোয়ারার মুখে গামছা পেঁচিয়ে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। একথা কাউকে না বলার জন্য মমতাজকে হুমকিও দেয়া হয়। রাত ১১টার দিকে বাবুল, লাবু ও তার মামা হাবু মিয়া মিলে কুপিয়ে মনোয়ারাকে খুন করে তার (মমতাজের) রান্না ঘরে পুঁতে রাখে।

পরে খবর পেয়ে মির্জাপুর থানা পুলিশ রবিবার রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে মমতাজের রান্না ঘরের মেঝের মাটি খুঁড়ে আনোয়ারার মরদেহ উদ্ধার করে।

মির্জাপুর থানার এসআই মনিরুজ্জামান মুন্সী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তেরর জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই নারীসহ পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তাছাড়া মমতাজের দেয়া বক্তব্য সঠিক কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

(আরকেপি/এসপি/মে ০৮, ২০১৭)