খুলনা প্রতিনিধি : জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, ফৌজদারি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলে বন্দি বাবদ রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় রোধ করা সম্ভব হবে।

খুলনার জেলা কারাগারের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এখানে সাজাপ্রাপ্ত তিনশ’ কয়েদি, বাকি এক হাজার ৪৫জন হাজতি। ১৩ জন বন্দির মামলা ৫ থেকে ১১ বছর পর্যন্ত চলছে। এদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। এক পর্যায়ে দেখা যাবে আসামিদের একটা অংশ নিরাপরাধ হিসেবে খালাস পাবে।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা কারাগার পরিদর্শন শেষে কারা ফটকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ভৈরব নদের তীরে ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মিত এ কারাগার নদীগর্ভে বিলুপ্ত হতে পারে। ২/১টি ভবন ভেঙেও পড়তে পারে।

তিনি জেলা কারাগার দ্রুত স্থানান্তর এবং কেন্দ্রীয় কারাগারের কাঠামোগত নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

খুলনা কারাগারে বন্দি দুজন ভারতীয় নাগরিকের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তাদের বড় ধরনের কোনো অপরাধ নেই। এ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন। আঠারো বছর বয়সী বাক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে মঙ্গলবার নিরাপদ হেফাজতের জন্য কারাগারে আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ না থাকলে দ্রুত রিলিজের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

মানবাধিকারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বন্দি এবং নির্যাতিতদের আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রত্যেক জেলায় লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই এ কমিটি কাজ শুরু করেছে।

মামলার দীর্ঘসূত্রিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বন্দি দীর্ঘ দিন জেলে থেকে বারবার কোর্টে হাজিরা দিচ্ছে। তার নাগরিক স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে। এতে বন্দির মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বন্দির মানবাধিকার অক্ষুণ্ন রাখতে আইনি সহায়তা দিচ্ছে।

এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নূর-ই-আলম সিদ্দিক, জেল সুপার মো. কামরুল ইসলাম ও জেলার জান্নাত-উল-ফরহাদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, খুলনা জেলা কারাগারে বন্দি ধারণ ক্ষমতা ৬০৮জন। বুধবার পর্যন্ত বন্দির সংখ্যা ছিল এক হাজার ৩৪৫জন।

(ওএস/এএস/মে ১০, ২০১৭)