লক্ষ্ণীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্ণীপুর জেলার  রামগঞ্জ থানা পুলিশে বিরুদ্ধে মো. ইব্রাহিম কারী নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ভাগিনাকে  পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে তাদেরকে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্রে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ বলেছে, ঘটনাটি সমাধান হয়ে গেছে।

এর আগে রাত সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার কাটাখালী এবং পরে থানা ভবনের ভেতরে এনে তাদেরকে মারধর করা হয়। আহত ইব্রাহিম উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন মো. রানার ভাই। এসময় তাদের ভাগিনা কাউছারও আহত হয়। পুলিশ সিগন্যালে সাড়া না দিয়ে মোটর সাইকেলে চালিয়ে যাওয়ায় এ ঘটানো ঘটানো হয়।

এদিকে খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী থানায় জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যান রানার সাথে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহজাহান ও সাধারণ সম্পাদক আ ক ম রুহুল আমিনসহ দলের সিনিয়র নেতারা থানার ওসির কক্ষে বৈঠক করেন। সেখানে পুলিশের পক্ষ থেকে ওসি তোতা মিয়া ক্ষমা চান এবং উপস্থিত সিনিয়র নেতারা লিখিত দিয়ে তাদেরকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার সোনাপুর এলাকায় শুক্রবার রাত সোয়া ৭ টার দিকে রামগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদসহ পুলিশ মাদক বিরোধী চেকপোষ্ট বসায়। এসময় আওয়ামী লীগ নেতা ইব্রাহীম ও তার ভাগিনা কাউছার মোটর সাইকেলে ওই রুটে যাচ্ছিলেন। পুলিশ তাদের থামানোর জন্য সিগন্যাল দিলেও তারা কর্ণপাত না করে চলে যায়। এসময় ধাওয়া করে কাটাখালিতে গিয়ে তাদেরকে থামানো হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদেরকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে এলাপাতাড়ি বেদম পেটাতে থাকে পুলিশ।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মো. হোসেন রানা বলেন, আমার ভাই ও ভাগিনা পুলিশকে পরিচয় দেওয়ার পরও হ্যান্ডকাপ পরিয়ে নির্দয়ভাবে দুই দফায় পিটিয়েছে। নির্যাতনে তাদের মুখ, ঠোট, হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তাক্ত ফোলা জখম রয়েছে। পুলিশের অমানবিক এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।

রামগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বলেন, ধস্তাধস্তিতে পড়ে গিয়ে তারা আহত হয়েছে। পুলিশের সিগন্যাল অমান্য করায় পেছন থেকে ধাওয়া করে দুইজনকে ধরা হয়েছিল। সমাধানের পর তারা কেন, হাসপাতালে ভর্তি হল বুঝতে পারছিনা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহজাহান বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। থানায় বৈঠকে পুলিশ ভুল স্বীকার করেছে।

এ ব্যাপারে রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোতা মিয়া বলেন, ঘটনাটি মিমাংসা করা হয়েছে। হ্যান্ডকাপ পরিয়ে আনা হয়েছে সত্য, তবে মারধর করা হয়নি। কাগজপত্র না থাকায় মোটর সাইকেলটি থানায় রাখা হয়েছে।

(এমআরএস/এসপি/মে ১৩, ২০১৭)