হুমায়ূন কবির জীবন, কুমিল্লা : তুমুল হট্টগোল, হইচই আর উত্তেজনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হলো কুমিল্লা বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিনিধি সভা। মঞ্চের সামনে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থান ও হৈচৈয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন কেন্দ্রীয় নেতারা। সোমবার নগরীর শিশুমঙ্গল রোডে বিএনপি অস্থায়ী কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, প্রতিনিধি সভা চলাকালে নাঙ্গলকোটের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূইয়া তার বক্তব্যে বিএনপি নেতা মোবাশ্বের আলম ভূইয়াকে ‘একসময়ের কর্মী’ উল্লেখ করে বক্তব্য দিলে মোবাশ্বরের সমর্থক নেতা-কর্মীরা হইচই ও হট্টগোল শুরু করে। এসময় পাল্টা হইচই ও উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থানে চলে যায় গফুর ভূইয়া সমর্থিত নেতা কর্মীরাও। দুই গ্রুপের হইচই ও উত্তেজনা কমাতে প্রতিনিধি সভায় আমন্ত্রিত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের চেষ্টায়ও তাদের শান্ত করা যায়নি। এসময় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে দেখা যায়।

পরে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিন ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের শান্ত হওয়ার আহবান জানান। এক পর্যায়ে মেয়র মনিরুল হক সাক্কু মঞ্চে থেকে নেমে গিয়ে উত্তেজিত হইচইকারীদের শান্ত হওয়ার জন্য বলেন। পরে তৃণমূল প্রতিনিধি সভা আবার শুরু হয়। এইসময় আবদুল গফুর ভূইয়া বক্তব্য দেয়া হয়নি। পরে আবার মোবশ্বের আলম ভূইয়া ও আবদুল গফুর ভূইয়াকে বক্তব্য দেয়া হয়। দু’জনে বক্তব্যে উত্তেজনা এড়িয়ে কথা বলেন।

প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও কুমিল্লার দক্ষিণ জেলা ও মহানগরের টিম লিডার শামসুজ্জামান দুদু।
সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বেগম রাবেয়া চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, সাবেক সংসদ সদস্য কর্নেল আনোয়ারুল আজিম, অধ্যক্ষ মো: ইউনুছ ভূইয়া, মাহাবুবুর রহমান ভূইয়া, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, বিএনপি নেতা সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, আবুল কালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া সমন্বয়কারী শামসুদ্দীন দিদার, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাবেরা আলাউদ্দিন, বিএনপি নেতা আবদুর রউফ চৌধুরী ফারুক, ভিপি জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

সঞ্চালনা করেন জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আমিরুজ্জামান আমির ও জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক মোস্তফা জামান।

বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও কুমিল্লার দক্ষিণ জেলা ও মহানগরের টিম লিডার শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সবাই তৈরি হন আগামীদিনে আমাদেরকে শেষ লড়াইটা লড়তে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকার গঠনের জন্য আন্দোলনে যেতে প্রস্তুতি হতে হবে। বাংলাদেশে ১৪ দলের সরকার আগামীতে থাকবে না। বেগম জিয়ার সরকার আসবেই। তবে লড়াইটা করতে হবে। সবাইকে এক জায়গায় আসতে হবে। প্রতিযোগিতা থাকবেই দলের ভিতর। সংগঠনটা আমাদের। সংগঠনকে টিকিয়ে রাখতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের নেত্রী ধানের শীষ যার হাতে দিবেন তাকে নিয়ে কাজ করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনটা কিভাবে তৈরি করবো, তার জন্য চাপের ব্যাপার আছে। চাপটা কিন্তু ইতিমধ্যে বেগম জিয়া দিয়েছেন। ছোট্ট একটা বিষয় ২০৩০। ঘোষণার দু’দিনে সরকারে তছনছ হয়ে গেছে। পৃথিবীর এমন কোনো মিডিয়া নেই ২০৩০ সালের ঘোষিত ভিশন ২০৩০-এর প্রশংসা করে নাই। শান্তিপূর্ণ পরিবর্তনের যে রাজনীতি এমন কিছু নেই যে এটাইতে নাই।

(এইচকেজে/এএস/মে ১৫, ২০১৭)