খুলনা প্রতিনিধি : খুলনা প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) প্রশিক্ষক মো. মাহবুব মোস্তফা আঙ্গুরকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার সঙ্গে সন্দেহভাজন জড়িত কম্পিউটার সায়েন্স ইনস্ট্রাক্টর প্রভাষ কুমার বিশ্বাস ও দুই হত্যাচেষ্টাকারীকে গত দুই মাসেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তারা গ্রেফতার না হওয়ায় চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন অতিবাহিত করছেন ঘটনার শিকার মাহবুব মোস্তফা আঙ্গুরের পরিবার।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের কাছে হত্যাচেষ্টাকারী ও পরিকল্পনাকারী খুলনা পিটিআই কর্মকর্তাদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মাহাবুব মোস্তফা আঙ্গুরের মা, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মিসেস রহিমা খানম।

মিসেস রহিমা খানম বলেন, খুলনা পিটিআইয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ইনস্ট্রাক্টর প্রভাষ কুমার বিশ্বাস, সুপার আব্দুস সালাম শিকদার ও ডিডি একেএম গোলাম মোস্তফার দুর্নীতি ও অনিয়মের এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কটাক্ষ করার প্রতিবাদ করায় তার ছেলে মাহবুব মোস্তফা আঙ্গুরকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। আঙ্গুরের শরীরে যে বুলেটটি রয়েছে তা বের করা সম্ভব নয়। এটা বের করতে গেলে তার জীবনের তরে পঙ্গুত্ব বরণ এমনকি মৃত্যু হতে পারে।

কম্পিউটার সায়েন্স ইনস্ট্রাক্টর প্রভাষ কুমার বিশ্বাস ও ইনস্ট্রাক্টর মোস্তফা কর্তৃক উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চেক জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎ করেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে ইনস্ট্রাক্টররা ডিডি একেএম গোলাম মোস্তফার কাছে অভিযোগ করেও কোনো ফল হয়নি। ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রশিক্ষক মো. মাহবুব মোস্তফা আঙ্গুরকে পিটিআই থেকে বদলী করে জয়পুরহাট দেয়া হয়।

এই আদেশ স্থগিত করার জন্য আঙ্গুর চেষ্টা করছেন জানতে পেরে তারা আঙ্গুরকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য হত্যার চেষ্টা চালায়। এই তিন কর্মকর্তার দুর্নীতি ও অনিয়মের অনেক খবর পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিতও হয়েছে।

গত ২৪ মার্চ দুপুর ২টার দিকে জুম্মার নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার পথে নগরীর পিটিআই মোড়ের সুলতানা হামিদ আলী স্কুলের বিপরীতের গলির মধ্যে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয় পিটিআই প্রশিক্ষক মো. মাহাবুব মোস্তফা আঙ্গুরকে (৩৬)।

এ ঘটনায় আহত মাহাবুব মোস্তফা আঙ্গুর বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের নামে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন- প্রাইমারি টিচার্স ইনস্টিটিউট (পিটিআই) খুলনার সুপারিন্টেন্ডেন্ট আব্দুস সালাম শিকদার, উপ-পরিচালক একেএম গোলাম মোস্তফা ও কম্পিউটার সাইন্সের ইনস্ট্রাক্টর প্রভাষ কুমার বিশ্বাস।

পুলিশ অভিযান চালিয়ে খুলনা পিটিআইয়ের সুপারিন্টেন্ডেন্ট আব্দুস সালাম শিকদার ও নৈশপ্রহরী শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণও পাওয়া যায়।

খুলনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, আমরা আসামিদের গ্রেফতারের জন্য সব চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। যেকোনো সময় আসামিরা গ্রেফতার হতে পারে বলেও জানান তিনি।

(ওএস/এসপি/মে ১৮, ২০১৭)