বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনায় তাজিনুর নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী ও সতীনের ছেলেকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। আদেশে গৃহবধুর সতীন ও সতীনের ছেলের স্ত্রীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছেন, বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার তাফালবাড়িয়া গ্রামের খলিলুর রহমান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে ইসমাইল হোসেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হচ্ছেন, সতীন খাদিজা বেগম ও ছেলের স্ত্রী খুশী বেগম। বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো. নজরুল ইসলাম রবিবার দুপুরে চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। বরগুনার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ভুবন চন্দ্র হাওলাদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী এপিপি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল জানান, পাথরঘাটার তাফালবাড়িয়া গ্রামের খলিলুর রহমান একই গ্রামের আবদুর রশিদের মেয়ে তাজিনূর বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও সতীনের নির্যাতনের কারনে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেখা দেয়। এ ঘটনার জের ধরে স্বামী ও সতীন মিলে গৃহবধু তাজিনুরকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছি। বিগত ২০০৬ সালের রাত আটটার দিকে খলিলুর রহমান, তার প্রথম স্ত্রী খাদিজা বেগম, তাদের ছেলে ইসমাইল হোসেন ও পুত্রবধূ খুশী বেগম মিলে পরিকল্পিতভাবে তাজিনূর বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করা করে।
এ হত্যাকাণ্ডের পর নিহত তাজিনূরের বাবা আবদুর রশিদ বাদী হয়ে পাথরঘাটা থানায় তাজিনুরের স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির চারজনের নামে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তশেষে পুলিশ আদালতে চ’ড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আদালতে প্রমানিত হলে আদালত রবিবার ২ জনকে ফাঁসির আদেশ ও ২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করে।
রায় ঘোষনার সময় সতীনের ছেলে ইসমাইল হোসেন, সতীন খাদিজা বেগম ও ইসমাইলের স্ত্রী খুশী বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত প্রধান আসামী নিহত তাজিনুরের স্বামী খলিলুর রহমান জামিনে গিয়ে বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন, অ্যাডভোকেট তোফাজ্জেল হোসেন কিসলু তালুকদার। তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, তারা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তারা উচ্চাদলতে আপিল করবেন। রায়ের পরেই তিন আসামীকে বরগুনা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
(এমএইচ/এএস/জুন ২২, ২০১৪)