প্রবীর সাহা, পাবনা : পাবনার ঐতিহ্যবাহী গাজনার বিলের পাকা ইরি ধান ঘরে তোলা নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। সুজানগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গাজনার বিলের জমিতে এবার ইরি ধানের বাম্পার ফল হয়েছে। তবে আগাম অতি বৃষ্টি এবং স্থানীয় সুলইসগেট দিয়ে আসা পানিতে বিলের রাস্তা-ঘাট কর্দমাক্ত হওয়ায় কৃষকরা ধান ঘরে তোলা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। অপরদিকে বিলের নিম্নাঞ্চলের জমিতে পানি ঢুকে পরায় কৃষকদের ধান কাটতে শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে অধিক মঞ্জুরী।

জেলার সুজানগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বিস্তৃত গাজনার বিলের ১৩‘শ হেক্টর জমিতে ইরি ধান আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আর সঠিক সময়ে সার বিষ ও সেচ দেওয়ায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা ধানা কাঁটা এবং মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র মতে প্রতি বিঘা জমিতে ধানের ফলন হয়েছে ১৫/১৬ মণ। তবে সাম্প্রতিক সময়ের অতি বৃষ্টিতে বিল অঞ্চলের রাস্ত-ঘাট কর্দমাক্ত হয়ে গেছে। এতে কৃষকরা ধান কেটে ঘরে তুলতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে।

বিলপাড়ের ভুক্তভোগী কৃষক আলহাজ খান জানান, অন্যান্য বছর বিল থেকে ধান কেটে শ্রমিক দিয়ে ঘরে তুলেছি। কিন্তু এ বছর বৃষ্টির পানিতে বিলের রাস্তা-ঘাট কর্দমাক্ত হওয়ায় শ্রমিক দিয়ে ধান ঘরে তোলা যাচ্ছে না। মহিষের গাড়ীর সাহায্যে ধান ঘরে তুলতে হচ্ছে। অনেক সময় মহিষের গাড়ীও কাদা-পানিতে আটকে যাচ্ছে। পাশাপাশি অতি বৃষ্টি এবং স্থানীয় ত্রিমোহনী স্লুইসগেট দিয়ে আসা যমুনা নদীর পানিতে গাজনার বিলের নিম্ন অঞ্চলের বকসির খাল, জমের থলি, মাটি কাঁটা খাল এবং শিয়ার খালের প্রায় ১‘শ হেক্টর জমির পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব জমির ধান কাটতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শারীরভিটা গ্রামের কৃষক বাদশা শেখ জানান, নিম্ন অঞ্চলের জমি প্লাবিত হওয়ায় কোমড় পানিতে ভিজে ধান কাটতে হচ্ছে। এতে শ্রমিককে দিতে হচ্চে দৈনিক ৮’শ থেকে ৯’শ টাকা মজুরি।

সুজানগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ময়নুল হক সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ইতোমধ্যে সুলইসগেট দিয়ে পানি নামতে শুরু করেছে, ফলে ধান কাটতে আর কোন সমস্যা হবে না। এমনকি ধানের কোন ক্ষতি হওয়ারও সম্ভাবনা নেই।

(পিএস/এএস/মে ২৭, ২০১৭)