চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর বিওপি অধীনস্থ বিট গ্রহীতা মোঃ আব্দুল খালেক এর বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ এনেছে তার অংশীদারগণ। অভিযোগকারীরা হলেন ধানমন্ডির বাসিন্দা (অবঃ মেজর) চৌধুরী আবুল হাসনাত এর স্ত্রী সামসী পপি, মিরপুর-২ এর মাসুদ রানা ও শিবগঞ্জের পাঁকা ইউনিয়নের মোঃ তরিকুল ইসলাম।

তাদের অভিযোগ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের চাঁদলাইয়ের মৃত মোমতাজ উদ্দিনের ছেলে আঃ খালেক গত ১৪ জুলাই ২০১৬ ইং তারিখ তাদের সাথে রঘুনাথপুর বিট পরিচালনা ও অংশীদারি চুক্তিনামা স্বাক্ষর করেন। প্রথম পক্ষ আঃ খালেক ৪৯% ও অভিযোগকারী তিন জন দ্বিতীয় পক্ষ ৫১% ভাগের অংশীদার। চুক্তিপত্রে রঘুনাথপুর বিট অনুমোদন খরচের সাড়ে ৭ লাখ টাকা বিটের কার্যক্রম শুরুর ১ মাসের মধ্যে পরিশোধের কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু চলতি বছর নবায়ন শেষে বিভিন্ন টালবাহানা করে এখন পর্যন্ত কোন হিসাব ও টাকা দিচ্ছেনা এবং সে চুক্তি ও অংশীদারি অস্বীকার করছে।

এ বিষয়ে বিট গ্রহীতা মোঃ আব্দুল খালেক এর বক্তব্য, তাদের সাথে এক বছরের জন্য চুক্তি ছিলো। বিগত বছরে তাদের সাথে ব্যবসা করেছি। এবার আমি তাদেরকে বাদ দিয়ে বিট নবায়ন করেছি। এখন তাদের সাথে আর কোন অংশীদারি চুক্তি নেই। আমার ব্যবসার উপর লোভ করে তারা বিভিন্ন জায়গা অভিযোগ করছে।

তরিকুল ইসলাম বলেন, ২০১৫ সালে মাসুদপুর নবায়নের পর আমি পরিচালক হিসেবে আঃ খালেককে দায়িত্ব দিই। সেই বিটের উপার্জিত টাকা দিয়ে খালেকের নামে রঘুনাথপুর বিট অনুমোদন করা হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের মাত্র ৯ মাস পরেই তা উপেক্ষা করে প্রভাব খাটিয়ে একাই সমস্ত ব্যবসা ভোগদখল করছে। নিরুপায় হয়ে আমি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ৯ বিজিবি সিও, শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, দুর্লভপুর ইউপি চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছি।

তিনি আরো বলেন, গত ২৯ মে সোমবার দুপুর ২.৩০টার সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করে বের হয়ে আসার সময় অফিসের গেট থেকে খালেকের লোকজন শহরের আরামবাগের মো শওকত হোসেন এর ছেলে মোঃ বকুল এর নেতৃত্বে জোরপূর্বক আমাকে নিয়ে যায় খালেকের চাঁদলাইয়ের রোজ ক্যাবল এর অফিসের। অল্প সময় পরে সেখান থেকে আমাদের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে।

খালেক এর আরেক অংশীদার সামসী পপি বলছেন, আ খালেক এর সাথে আমাদের যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে সেটি এক বছরের জন্য নয়। যতদিন ঐ বিট চলমান থাকবে ততদিনের জন্য। এজন্য চুক্তিনামায় কোথাও উল্লেখ নাই যে এক যে এই চুক্তির মেয়াদ এক বছর। খালেকের কাছে গত বছরের বিটের লভ্যাংশ এখনো জমা রয়েছে। বিট নবায়ন শেষে মে মাসে প্রথম সপ্তাহে হিসেব ও লভ্যাংশ দেয়ার কথা ছিল। কিন্ত এখন সে আর আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করছেনা।

মাসুদ রানা বলছেন, বিশ্বাস করে খালেকের নামে আমরা বিট অনুমোদন করেছি টাকা খরচ করেছি এবং চুক্তিনামা দলিল করেছি। এখন সে বিশ্বাস ও চুক্তি ভঙ্গ করে স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে আমাদের অংশ ভোগদখল করছে এবং আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করছেনা। সে বিভিন্ন জনের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে আমাকে হুমকি দিচ্ছে।

রঘুনাথপুর বিওপি সংলগ্ন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক মোঃ সেরাজুল ইসলাম জানান, বর্তমানে রঘুনাথপুর বিটে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের প্রায় ৫০ জন জামায়াত-শিবিরের ক্যাডারকে শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ করেছে খালেক। ফলে এলাকায় বেকারত্ব বাড়ছে। খালেক প্রকাশ্যে বলছে, আমি শহরের ছেলে শহরের লোক দিয়েই বিট পরিচালনা করা হবে।

স্থানীয়রা বলছেন, খালেক স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান কারো সাথেই সম্মানজনক আচরণ করেন না। শহরের মাদকাসক্ত লোকজন নিয়ে এলাকায় এধরণের অরাজকতা চলতে থাকলে রঘুনাথপুর সীমান্তে আইন শৃংখলার অবনতি হতে পারে।

(আরআর/এএস/মে ৩১, ২০১৭)