আহম্মদ ফিরোজ, ফরিদপুর থেকে :


ফরিদপুরে বিএনপির রাজনীতির উজ্জল নক্ষত্র আফজাল হোসেন খান পলাশ। ছাত্র রাজনীতির বর্ণাঢ্য সময় পেরিয়ে এখন তিনি জেলা যুবদলের সভাপতি। ৮০’র দশক থেকে শুরু করে আজ অব্দি ফরিদপুরে বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গণে এক অকুতোভয় সাহসী বীরের নাম আফজাল হোসেন খান পলাশ। নিজের কর্ম দক্ষতায় জেলায় তার সমর্থক নেতাকর্মী অগণিত।

ফরিদপুরে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে আফজাল হোসেন খান পলাশ পুলিশের নিকট সবচেয়ে আতঙ্কজনক একজন নেতা। যিনি মুহুর্তের মধ্যে একডাকে শত শত কর্মীর সমাবেশ ঘটাতে পারেন। সরকারের হামলা-মামলার মধ্যেও তিনি ফরিদপুরে দলকে চাঙ্গা রেখেছেন বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে। নব্বইয়ের স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় এই তরুণ ছাত্রনেতা বলিষ্ট ভূমিকা রাখেন তিনি। সেসময়ে স্বৈরাচার বাহিনী তাকে কয়েক দফা আটক করে কারাগারে প্রেরণ করেছিল।

দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ফরিদপুরের এই অকুতোভয় জাতীয়তাবাদী সৈনিক নিজ দলেই চক্রান্তের শিকার। ফরিদপুরে বিএনপির মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা একটি কুচক্রি মহল ক্ষমতাসীনদের সাথে আতাত করে রাজপথের এই অকুতোভয় সৈনিককে ষড়যন্ত্রমুলক হত্যা ও বিস্ফোরক মামলার আসামী করেছে। এছাড়া এ পর্যন্ত আরো ১৭টি মামলা দিয়ে আফজাল হোসেন খান পলাশের রাজনৈতিক অগ্রযাত্রাকে রুখে দেয়ার অপচেষ্টা চলছে তার নিজ দলেই। সব মিলিয়ে ১৮টি রাজনৈতিক মামলার আসামী তিনি। তার এখন সময় কাটে আদালত প্রাঙ্গণে মামলার হাজিরা দিতেই।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সদর উপজেলার আদমপুরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে এক যুবকের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে ওই যুবক তাকে বোমা বানানোর জন্য কারা নিয়ে এসেছিল তা জানিয়ে যায়। মৃত্যুর আগে জবানবন্দিতে ওই যুবক কয়েকজনের নাম বলে গেলেও আফজাল হোসেন খান পলাশের নাম সে বলেনি। কিন্তু ঘটনার পর ফরিদপুরে বিএনপির চক্রান্তকারীরা ষড়যন্ত্রমুলকভাবে আফজাল হোসেন পলাশের নাম জড়িয়ে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা চালায়। ৫ জানুয়ারী পরবর্তী আন্দোলন সংগ্রামে আফজাল হোসেন খান পলাশের নেতৃত্বে ফরিদপুরে সৃষ্ট গণজোয়ার রোধ করতেই এ অপতৎপরতা চালানো হয়। ওই চক্রান্তকারীরা আজ অব্দি ফরিদপুর বিএনপিতে বহাল তবিয়তে রয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে ভুল বুঝিয়ে এখনো তারা ফায়দা হাসিলে ব্যস্ত।

আফজাল হোসেন খান পলাশ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আজীবন আমি সংগ্রাম করেছি। কিন্তু কখনো ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করিনি। সদর উপজেলার আদমপুরে বোমা বিস্ফোরণের একজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আমি কিছুই জানতাম না। তবে ফরিদপুরে বিএনপির মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা একটি কুচক্রিমহল ক্ষমতাসীনদের সাথে আতাত করে আমাকে ওই মামলায় আসামী করে। এখনও তাকে নেতৃত্বশূণ্য করার জন্য নিজ দলের মধ্যে চক্রান্ত চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

আফজাল হোসেন খান পলাশের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন : ১৯৮৩-৮৪ সালে ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সদস্য হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। এরপরের বছর ১৯৮৪-৮৫ সালে ফরিদপুর শহর ছাত্রদলের যুগ্ন আহবায়ক হন। ১৯৮৯-৯০ সালে রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্রসংসদ রুকসু'র জিএস নির্বাচিত হন। ১৯৯০-৯১ সালে ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৯০-৯১ সালে ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ও পরের বছর ১৯৯২-৯৪ সালে ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হন সম্মেলনের মাধ্যমে। ২০০১ সালে ফরিদপুর জেলা যুবদলের সহ সভাপতি ও ২০১২ সালে ফরিদপুর জেলা যুবদলের সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে কয়েক দফা গ্রেফতার ও কারারুদ্ধ হন। ২০১২ সালে জেলা যুবদলের দায়িত্বে আসার পর চারদফা ১৭ টি রাজনৈতিক মামলায় মোটা ২৭৪ দিন কারারুদ্ধ হন।

(এএস/অ/মে ৩১, ২০১৭)