ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে দিগন্তজুড়ে নজর কাড়ছে কচু ক্ষেত।  চারিদিকে যেন গাঢ় সবুজের বিপ্লব।  এ এলাকায় ব্যঙ্গ করে যে কথাটি বলা হয় তা হচ্ছে ‘কচু’।  কারও কোন জিনিস নিয়ে ফেরত না দিলে, সঠিক সময়ে কাজটি করতে মন না চাইলে, তখন আমরা ডান হাতের বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বলি ‘কচু’।  তার মানেই ব্যঙ্গ করে এ কথাটি বলা হয়।  এমনি আরও অনেক কথা আছে যেখানে আমরা কচু শব্দটি উচ্চারণ করি।

কচুর এত গুণাগুণ থাকা সত্ত্বেও কথায় কথায় কেন ‘কচু’ বলা হয়? কচুকে শুধু তাচ্ছিল্য করা হয় তাই নয়। কিন্তু সকলেই জানে কচুতে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ আছে। কচু খেলে শরীরে রক্ত হয়। আর সেই কচু দীর্ঘ বছর ধরে চাষ হয় গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায়।

বিশেষ করে এ উপজেলার সবজি খ্যাত এলাকার নাম ধাপেরহাট। আলু, পটল, করলা ও হলুদ সহ বিভিন্ন সাথী ফসলের পাশা-পাশি এবারে ধাপেরহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে চাষ করা হয়েছে বইকচু। গত বছরের তুলনা এবার কচুর চাষাবাদ অনেকটাই বেড়েছে। ফলনও হতে পারে বাম্পার। বাজারে বেড়ে গেছে কচুর কদর। এর ফলে কচু আবাদ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন ধাপেরহাটের কৃষকেরা।

বুধবার সকালে সরেজমিনে ধাপেরহাটের হাসানপাড়া গ্রামের কচু চাষী মোকছেদ আলীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, মৌসুমের শুরুতে কেজি প্রতি কচু বিক্রি হয় ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে। এরপরও অন্য ফসলের তুলনায় লাভ থাকছে তাঁদের। তাই কচু চাষীদের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক।

ছোট ছত্রগছা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন, নায়েব আলী, ও মোহাম্মদ আলী জানান, কচু চাষে বিঘাপ্রতি ১০ হাজার টাকা খরচ করে যার ফলন পাওয়া গেছে ৬০ থেকে ৭০ মণ। যা বিক্রি শেষে ৫০ হাজার টাকা নীট আয় করা সম্ভব।

সাদিপাড়া গ্রামের খোকা মিয়া ও দুলু মিয়া অভিযোগ করেন বলেন, কৃষি বিভাগের কোন কর্মকর্তা আমাদের কোন পরামর্শ দেন না। এমন কি তাদেরকে খবর দিলেও চোখে দেখা যায় না।

জামালপুরের বুজরুক রসুলপুর গ্রামের কচু চাষী জহির উদ্দিন জানান, আামাদের এলাকায় বিভিন্ন ধরণের সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ কিংবা কোন সহায়তা পেলে আরও লাভবান হওয়া সম্ভব।

সাদুল্যাপুর উপজেলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. ফজলে এলাহী বলেন, কচুর দাম বাজারে তুলনামূলক ভালো থাকায় কৃষকেরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। কচুর আবাদ নিয়ে কৃষি বিভাগ কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।

(এসআইআর/এসপি/জুন ০১, ২০১৭)