কক্সবাজার প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগ সরকার দারিদ্র্যবান্ধব উল্লেখ করে দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা দুর্গত এলাকার একটি মানুষও না খেয়ে থাকবে না। তাদের আগের অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দিবে। ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ ছাড়া সবকিছুই পুষিয়ে দেয়া হবে।

ঘূর্ণিঝড় মোরা আক্রান্ত কক্সবাজার পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা বিতরণের পূর্বে শুক্রবার সকালে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আসা কেন্দ্রীয় কমিটির ১১ সদস্য নিয়ে গড়া ত্রাণ কমিটি ৩ ভাগে ভাগ হয়ে জেলায় ঘূর্ণিঝড় আক্রান্তদের ত্রাণ সহায়তা দিতে ছুটছেন।

সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে রয়েছন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামিম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সদস্য রাশেদুল ইসলাম। এই গ্রুপটি ত্রাণ বিতরণ করতে টেকনাফ গেছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন স্থানীয় সাংসদ আব্দুর রহমান বদি, জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়ুয়া, আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলম (রাজা), নাজনিন সরওয়ার কাবেরী প্রমুখ। তারা টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ, সাবরাং ও সেন্টমার্টিনে ৪০ মে.টন চাল ও নগদ টাকা বিতরণ করবেন দুর্গতদের মাঝে।

অপরদিকে, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ কুতুবদিয়ায় গেছেন। তার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. সিরাজুল মোস্তফা, স্থানীয় সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক।

এছাড়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুবির কুমার রায় নন্দীসহ ত্রাণ কমিটির কিছু সদস্য গেছেন চকরিয়া-পেকুয়ার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায়। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাফর আলম এমএ, জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি রেজাউল করিমসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবন্দ।

কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নেতৃত্বে বাঁশখালী-আনোয়ারায় যোগ দিবেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী জাবেদসহ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।

আর আকতারুজ্জামান ও অসীম কুমার উকিলের নেতৃত্বে বান্দরবান-রাঙামাটিতে প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর, দীপংকর তালুকদারসহ জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ত্রাণ সহায়তা বিতরণে যোগ দেবেন।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে আসা টিমের সদস্য কর্তৃক বিতরণের লক্ষ্যে মহেশখালী ৩৭ মে.টন, কুতুবদিয়ায় ৩০ মে. টন, পেকুয়া উপজেলায় ১০ মে. টন, টেকনাফের শাহ পরীরদ্বীপ, সাবরাং ও সেন্টমার্টিনের জন্য ৪০ মে. টন, কক্সবাজার পৌরসভার জন্য ১৫ মে. টন ও চকরিয়ার জন্য ১৫ মে. টন জিআর চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও চলমান কার্যক্রম হিসেবে ১ জুন পুরো জেলার ২৮৭ মে.টন চাল, নগদ ৩৩ লাখ টাকা ও ৩০০ বান্ডিল টিন বিতরণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন জেলা প্রশাসক।

আর জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ত্রাণের সঙ্গে প্রতি জনকে নগদ এক হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তাও দেয়া হচ্ছে বলে জানান জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোরার ছোবলে আক্রান্তদের মাঝে ত্রাণ দিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ১১ জনের কেন্দ্রীয় ত্রাণ কমিটি বৃহস্পতিবার ইফতারপূর্ব সময়ে বিমানযোগে কক্সবাজার পৌঁছান। এরপরই তারা সরকারী কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় করণীয় নির্ধারণ করেন।

সেই মতে, শুক্রবার সকালে কক্সবাজার শহরের এক নম্বর ওয়ার্ড সমিতিপাড়ায় ঘূর্ণিঝড় মোরায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। শনিবার দলের সকল সদস্যর মহেশখালী যাওয়ার কথা রয়েছে।

(ওএস/এসপি/জুন ০২, ২০১৭)