বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি : ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভার ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শনিবার সকাল বেলায় ষাটমাছড়া বাঁধের দুটি স্থান ভেঙে এবং নিকড়িছড়ার পানি উপচে শহর ও বাসা বাড়িতে পানি প্রবেশ করে। এতে দোকানসহ প্রায় দেড় হাজার ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়েছেন প্রায় ছয় হাজার মানুষ। দোকান পাটে পানি ঢুকে পড়ায় ব্যবসায়ীরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। জলাবদ্ধতার শিকার মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোর রাত তিনটা থেকে এ উপজেলায় ভারি বর্ষণ হতে থাকে। সকাল প্রায় নয়টা পর্যন্ত টানা এই বৃষ্টিপাত চলে। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ষাটমাছড়ার বড়লেখা ডিগ্রি কলেজ এলাকা এবং ষাটহাল এলাকার দুটি স্থানের বাঁধ ভেঙে যায়। অপরদিকে নিকড়িছড়ার পানি উপচে প্রবাহিত হয়। এতে বড়লেখা পৌরসভার পানিধার, গাজিটেকা, বাঁশতলা, ষাটহাল, আদিত্যেরমহাল, বারইগ্রাম, হাজীগঞ্জ বাজারসহ ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। এতে অন্তত এক হাজার ২০০ বাসাবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। শহরের হাজীগঞ্জ বাজার এলাকায় তিন শতাধিক দোকানে পানি উঠেছে। বিভিন্ন স্থানের সড়ক ও বাসাবাড়ি এলাকা হাঁটু সমান পানিতে ডুবে গেছে।

সরেজমিনে মৌলভীবাজার-কুলাউড়া-বড়লেখা-বারইগ্রাম সড়কের বড়লেখার কাঁঠালতলি থেকে পানিধার বাজার পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এবং বড়লেখা বাজার থেকে বড়লেখা-শাহবাজপুর সড়কের বড়লেখা ডিগ্রি কলেজ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক ডুবে থাকতে দেখা গেছে। জরুরী প্রয়োজনে ট্রাক্টর দিয়ে লোকজন সড়কের ডুবে যাওয়া অংশ পারাপার হচ্ছেন। এছাড়া উপজেলা কমপ্লেক্সের আবাসিক এলাকা, নারীশিক্ষা একাডেমি ক্যাম্পাসও ঢলের পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বড়লেখা পৌরসভার ১, ২ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকাই বেশি প্লাবিত হয়েছে। ৩ নম্বর ওয়ার্ড আংশিক প্লাবিত হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিকেল সাড়ে ৫টায় এ সড়কগুলোতে হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকতে দেখা গেছে।

বড়লেখা পৌরসভার মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী শনিবার বলেন, ‘ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে রাস্তাঘাট ও বাসাবাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। আমি পানিবন্দী বিভিন্ন এলাকাগুলো ঘুরে দেখেছি। পাঁচ থেকে ছয় হাজার মানুষ পানিবন্দী ও ক্ষতিগ্রস্ত। ষাটমাছড়া ও নিকড়িছড়া ভরাট হওয়ায় এই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এই ছড়া দুটি খনন না করা পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান হবে না।’

(এলএস/এএস/জুন ০৩, ২০১৭)