শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার নশাসন ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র স্থানীয় আওয়ামীলীগের দ্বন্দে প্রতিপক্ষের আক্রমনে টেঁটা বিদ্ধ হয়েছেন আওয়ামীলীগ নেতা লিটন হাওলাদার (৪৫)।  তার অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নড়িয়া উপজেলার নশাসন ইউনিয়নে দীর্ঘদিন যাবত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামীলীগের দু’টি গ্রুপে দ্বন্দ চলে আসছিল। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নশাসন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবুল মোল্যা এবং অপর গ্রুপে নেতৃত্বে আছেন আওয়ামীলীগ নেতা দবীর হোসেন চোকদার। বাবুল মোল্যাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিচ্ছে নড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ইসমাইল হক আর দবীর চোকদার-ফরহাদ গংদের প্রশ্রয় দিচ্ছে জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন তালুকদার। এ দু’টি গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এলাকায় একাধিকবার সংঘর্ষ, মারামারি, বাড়ি ঘর ভাংচুর সহ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। রোববার সকাল অনুমান সাড়ে ১১টায় নশাসন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও একেএম ইসমাইল হক এর সমর্থক লিটন হাওলাদার নশাসন ইউনিয়নের মাঝি কান্দি সাত্তার মাঝির বাড়ির নিকট তার জমি দেখা শুনা করতে যান। এ সময় দেলোয়ার হোসেন তালুকদারের সমর্থক নশাসন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন মাঝির নেতৃত্বে মাসুম ছৈয়াল ,ইমরান সরদার, জুলহাস সরদার সহ ১০/১২জন লোক অতর্কিত ভাবে লিটনকে অঅক্রমন করে। এসময় আক্রমনকারিরা লিটন হাওলাদারকে ঘিড়ে ফেলে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর জখম করে এবং তার পিঠে টেটা বিদ্ধ করে।

এ সময় লিটনের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর অবস্থার আশংকাজনক হওয়ার কারনে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। তার অবস্থা আশংকা জনক। এ ঘটনার পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। নড়িয়া থানার পুলিশ খবর পেয়ে এলাকা পরিদর্শন করেছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে আহত লিটন হাওলাদারের ছোট ভাই নুরুজ্জামান হাওলাদার বলেন, পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে আমার ভাই লিটন হাওলাতদার কে ফরহাদ মাঝির নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র ও টেটা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। তার অবস্থা আশংকাজনক । আমরা এর বিচার চাই।

অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। আমি এটা পছন্দ করিনা। যারা এ ধরনের কাজ করেছে তাদের আমি সমর্থন করিনা।

নড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম ইসমাইল হক বলেন, দেলোয়ার তালুকদারের লোকেরা দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। লিটন হাওলাদারকে এর আগেও কয়েকবার মারপিট করেছে। কিন্ত নড়িয়া থানা পুলিশ কোন ভূমিকা নিচ্ছে না। দবীর চোকদার-ফরহাদ মাঝি গংদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে আজ লিটনের উপর হামলা হয়েছে।

নড়িয়া থানার ওসি মোঃ ইকরাম আলী মিয়া বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকেরা লিটন হাওলাদারকে কুপিয়ে আহত করেছে। চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো থানায় কোন মামলা করা হয়নি।

(কেএনআই/এএস, জুন ০৪, ২০১৭)