সপ্তকা বিশ্বাস, বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি : প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এই গরমেই এসেছে পবিত্র রহমতের মাস মাহে রমজান।  মাঝেমাঝে এক পশলা বৃষ্টি এসে প্রশান্তি দিলেও আবারও গরমে অতিষ্ট হচ্ছে রোজাদার ব্যাক্তিরা।  রোজদারদের ইফতারীরর তালিকায় মধু মাসের বিভিন্ন ফল আম, লিচু, কাঁঠালসহ বিদেশী খেজুর ও অন্যান্য ফলের পাশাপাশি বাড়তি যোগ হয়েছে কাঁচা তালের শাঁস। রমজান মাসকে কেন্দ্র করে এই তালের শাঁস বড়াইগ্রামসহ আশে-পাশের উপজেলার সব বাজার দখল করেছে। বিশেষ করে বিকেল থেকে রাত ৮টা অবধি উপজেলার বিভিন্ন  মোড়ে মোড়ে ভ্যানের উপর কাঁচা তালেল গাদা দেখা যায়।

‘গরমে সারাদিন রোজা থেকে আম খেতে অনীহা অনেকেরই। কিন্তু ইফতারের পর তালের শাঁস যেন প্রাণটা ভরিয়ে দেয়’-ঠিক এমনটাই জানান ইলেকট্রনিক্স দ্রব্যাদির ব্যবসায়ী বুলবুল আহমেদ।

বনপাড়া পৌর কাউন্সিলর ইমান আলী বলেন, বনপাড়া পৌর শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ভ্যানের উপর কাঁচা তালের শাঁস বিক্রি হরদম চলছে। তারাবির নামাজের আগ পর্যন্ত এই ভিড় প্রচন্ড আকারে থাকে। তবে সারাদিনেও বনপাড়া বাজারে বাসস্ট্যান্ড ও বাইপাস মোড়ে চলে তালের শাঁস বেচাকেনা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত যাত্রীরা বাসের বিরতীর সময় তালের শাঁস খেয়ে প্রসান্তি পায়। অনেকেই ইফতারের সময় পরিবারের সাথে খাওয়ার জন্য এসব তালের শাঁস বাড়িতে কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, শহর কিংবা গ্রাম সব অঞ্চলেই তালের শাঁসের কদর আছে, তালের শাঁসের দাম খুবই সীমিত বলে ধনী গরীব সবাই খেতে পারছে।

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ৪-৫ টি তাল শাঁস কিনে খান। প্রতিদিন বাড়িতেও নিয়ে যান। সারাদিন রোজা রাখার পর তালের পানি ও শাঁস খেয়ে প্রচন্ড পরিতৃপ্তি পান।

বনপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী বাবলু, মোজাম ও আবুল হোসেন জানান, তারা প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ তালের শাঁস বিক্রি করেন। প্রায় প্রতিটি তালেই তিনটা করে রোয়া বা চোখ থাকে। প্রতিটা রোয়া বা চোখ তিন টাকা করে বিক্রি করা হয়। এতে করে ১০০ তাল বিক্রি করলে প্রায় সারাদিনে ৯০০ টাকা পাওয়া যায় । এতে উপার্যন হয় কমপক্ষে ৫০০-৬০০টাকা। রমজানের এই তালেল শাঁস বিক্রি করে তাদের সংসারটা ভালোই চলে যাচ্ছে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট চিকিৎসক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, তালের পানি ও শাঁসে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন থাকে এতে আমাদের শরীরে ভালো উপকার হয়। রোজাদার ব্যাক্তিদের জন্য প্রচন্ড উপকার হলেও সারাদিন রোজা থেকে বেশি না খাওয়া উচিত। কারণ এতে করে পেটে ব্যথা ও পাতলা পায়খানাসহ বিভিন্ন অসুখ হতে পারে।

(এসবি/এসপি/জুন ০৫, ২০১৭)