স্টাফ রিপোর্টার : পোশাকে মানুষ এখন অনেক বেশি ব্যয় করে এবং এটাকেই অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি সূচক হিসেবে দেখছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেছেন, এখন দিবসে দিবসে মানুষের নতুন পোশাক লাগে। আর পয়লা বৈশাখে নববর্ষ ভাতার ব্যবস্থা করে একে উস্কে দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী।

সোমবার জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন মতিয়া। তিনি বলেন, ‘আগে আমাদের এক ঈদে আমাদের কাপড় দিত। আর বছরে তিন কি চার সেট কাপড় দিত। আজকে আমাদের রোজার ঈদে কাপড় কিনতে হয়, আবার কোরবানি ঈদে কাপড় কিনতে হয়, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে কাপড়, ২১ ফেব্রুয়ারি কাপড়, বসন্ত উৎসবের কাপড় বা ভ্যালেন্টাইন ডের কাপড়, ছেলে মেয়ের এতগুলো সেট।’

‘এই পয়লা বৈশাখ, নববর্ষে প্রধানমন্ত্রী নিজে বাতাস দিয়ে উসকাইয়া দিছেন, নববর্ষের ভাতা দিছেন। আর গিন্নিগুলো আছে বিপদে। কাপড় কেনা এক ঝামেলা আর এগুলো ধুয়ে ইস্ত্রি করা আরেক ঝামেলা।’-মতিয়ার এমন বক্তব্যে সংসদে বসা প্রধানমন্ত্রী মুচকি হাসেন। আর হাসির রোল পড়ে সংসদে।

মতিয়া বলেন, ‘কিন্তু তারপরও দেখলাম, তার মুখে পরিতৃপ্তির হাসি। ওই হাসিটুকুর জন্যই এই বিশেষ বরাদ্দকে আমি ভাল বলে মনে করি।’

প্রধানমন্ত্রী মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়ন করতে চায় বলেও জানান মতিয়া। তিনি বলেন, ‘মান্ধাতা আমলের শিক্ষা হিসেবে পেছনে ফেলে রাখা হয়েছিল। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সামনের দিকে নিয়ে আসতে চান।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বৃহৎ জনগোষ্ঠী খুব মডার্ন সাজি। তাই এই শিক্ষাকে খুব একটা পছন্দ করি না। এটা আউটডেটেড, এটা সেকেলে। আবার যখন ইলেকশন করতে চাই তখন প্রত্যেকে মাদ্রাসায় গিয়ে হুজুরদের বলি ভাই একটু লক্ষ্য রাখেন, আমাদের সঙ্গে থাকেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। আপনাদের পক্ষে আছি। আর সেখানে এই কথা বলে এসে তারপরে আমরা মডার্ন হয়ে যাই, এটা একটা হিপোক্রেসি, এটা একটা মোনাফেকি।’

‘এই মোনাফেকিটা আমাদের প্রধানমন্ত্রী মাননীয় শেখ হাসিনা করেন না। আর করেন না বলেই মাদ্রাসা শিক্ষাকে তিনি সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান, যুগোপযোগী করতে চান’-বলেন মতিয়া।

মাদ্রাসার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষাকেও সরকার এগিয়ে নিতে চান বলেও জানান মতিয়া। তিনি বলেন, দেশে শিক্ষার বিস্তার ঘটছে। গ্রামে গেলেই এসএসসি বা এইচএসসি পাস করা ছেলে-মেয়েদের দেখা যায়। কিন্তু চাকরি পাচ্ছে না। কারণ, কারিগরি দক্ষতা, জ্ঞানের অভাব। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। বলেন, এই জ্ঞান থাকলেই মোটামুটি চাকরি হয়।

মতিয়া বলেন, ‘একদিকে আমাদের সমাজে শিক্ষার যে পশ্চাদপদ কতগুলো চিন্তা ছিল সেগুলোকে আধুনিকীকরণ, যুগের সাথে তাল মেলানো, একই সময়ে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর যে ধর্মীয় অনুভূতি, সেটার সঙ্গে শ্রদ্ধা প্রদর্শনের পাশাপাশি আমরা যেন যন্ত্রের সঙ্গে পরিচিত হই,কারিগরি শিক্ষাকে উন্নত করি সে জন্যই বরাদ্দ বেশি দেয়া হয়েছে।’

(ওএস/এসপি/জুন ০৫, ২০১৭)