আহম্মদ ফিরোজ, ফরিদপুর : বর্ষা না আসতেই ফরিদপুর সদর উপজেলার দু’টি ইউনিয়নে পদ্মা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। একদিকে নদীর মাঝখানে ডুবোচর জেগে উঠছে। অন্যদিকে, নদীর পাড়ে ভাঙন শহর রক্ষা বাঁধমুখি হচ্ছে। নদী পাড়ের মানুষ এতে ভাঙন আতঙ্ক বাড়বে বলে শঙ্কায় রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সদও উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের আইজুদ্দিন মুন্সির ডাঙ্গী এলাকায় শহররক্ষা বাঁধ সংলগ্ন পদ্মা নদীর তীরে ভাঙন শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের মৃধা ডাঙ্গীতেও ভাঙন চলছে।

এ অবস্থায নদী পাড়ের অনেকে তাদেও বসতবাড়ী সরিয়ে নিচ্ছে। ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হচ্ছে। এছাড়া ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন, হাজীগঞ্জ, ভাঙ্গা, সদরপুর থানার বিভিন্ন স্থানেও নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই নদীর স্রোত বাড়ছে।

ডিক্রিরচর এলাকার বাসিন্দা কৃষক গঞ্জের খাঁ বলেন, গত ২০ বছর পর পদ্মা নদীর কবল থেকে এই গ্রাম জেগে উঠেছে। দফায় দফায় ঘর ভাঙছে। বসতভিটা ভাঙছে।

মৃধা ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মোহাম্মদ আলী বলেন, এখনই যদি ভাঙন প্রতিরোধ করা না হয় তাহলে শহররক্ষা বাঁধের ক্ষতি হবে। আতঙ্কে রাতে ঘুম হয় না। তিনি জানান, সিএন্ডবি ঘাটের পাশে আইজদ্দিন মুন্সির ডাঙ্গী গ্রাম সংলগ্ন শহররক্ষা বাঁধ থেকে ১৫-২০ ফুট দুরে পদ্মার ভাঙন দেখা দিয়েছে। বড় আকার ধারণের আগেই প্রতিরোধ করা প্রয়োজন।

ডিক্রিরচর ইউনিয়নের মুন্সীডাঙ্গির বাসিন্দা মাছ বিক্রেতা মোতালেব শেখ বলেন, এলাকাবাসী মিলে কয়েকদিন আগে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি পদ্মা নদীর ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। পদ্মা ভাঙ্গন থেকে গোলডাঙ্গি ব্রীজের দুরুত্ব মাত্র ২৫০ ফুটের মত। শহর রক্ষা বাঁধের গলার কাছে এসে পড়েছে পদ্মার ভাঙ্গন। আমরা অবিলম্বে এই ভাঙ্গন প্রতিরোধের দাবি জানাই।

নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তাকুজ্জামান মোস্তাক জানান, গত কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীর ভাঙনে ইউনিয়নের মৃধা ডাঙ্গী এলাকার অনেক জমি নদীগর্ভে ধসে গেছে। পদ্মার মধ্যে জেগে ওঠা ডুবোচর স্রোতের গতি শহর বাঁধের দিকেই ঘুরিয়ে দিয়েছে। ডুবোচরটি খননের মাধ্যমে অপসারণ করে দিলে স্রোতের গতি আরো কমে যেত। এখই ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরণের বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, পদ্মা নদী বিভিন্ন জায়গায় ভাঙছে বলে খবর পেয়েছি। কিন্তু প্রকল্প ছাড়া বা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না। বিষয়টি যদি জরুরী হয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

(এফএ/এএস/জুন ০৭, ২০১৭)