স্টাফ রিপোর্টার : ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সংসদে জানিয়েছেন, গত সাড়ে আট বছরে দেশে মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০০৯ সালে মোবাইল ফোনের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৪০ লাখ ১২ হাজার জন। ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটি ৩০ লাখ ১১ হাজার জনে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে মো. নবী নেওয়াজের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান তারানা হালিম।

তিনি জানান, সরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের নেটওয়ার্ক বেসরকারি কোম্পানির তুলনায় বিস্তৃত না হওয়ায় তুলনামূলকভাবে এর গ্রাহক সংখ্যা কম। তবে টেলিটকের গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ না থাকার কথা সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন।

সরকারি দলের সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তথ্য-প্রযুক্তির উৎকর্ষতা বৃদ্ধির সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকি কিছুটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিষয়টি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় আইনি, কারিগরি ও সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে বিভিন্ন কারিগরি ও সাংগঠনিক পদক্ষেপের পাশাপাশি এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি অপরিহার্য।

তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে বাবা-মা, অভিভাবক হতে শুরু করে সমাজের সব শ্রেণির মানুষের সম্পৃক্ততায় একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা অপরিহার্য।

তিনি বলেন, সাইবার অপরাধ প্রতিরোধের লক্ষ্যে বিটিআরসিতে বিডি-সার্ট গঠন করা হয়, যার মাধ্যমে ইন্টারনেটভিত্তিক অপরাধ দমনে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ইতোমধ্যে অসংখ্য সরকারবিরোধী ও ধর্মবিরোধী কনটেন্ট আইআইজির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে অপসারণের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

সরকারি দলের সামশুল হক চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, টেলিযোগাযোগ সেক্টরে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা সবসময়ের জন্য একটি আলোচিত বিষয়। কিন্তু এই অবৈধ ব্যবসার দরুন সরকারের প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা কঠিন। অবৈধ ভিওআইপির জন্য বৈধ পথে আসা কলের পরিমাণ হ্রাস পেয়ে থাকে। টেলিযোগাযোগ সেক্টরে এই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা বন্ধে বিটিআরসি হতে সময় সময় নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তারানা হালিম বলেন, আন্তর্জাতিক ইনকামিং কলরেট হ্রাস করা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতায় অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে অবৈধ ভিওআইপির পাশাপাশি ওটিটি অ্যাপসের ব্যবহার আন্তর্জাতিক ইনকামিং কলের পরিমাণ হ্রাসের অন্যতম কারণ।

প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, বৈদেশিক কলের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিভিন্ন প্রাইভেট আইজিডব্লিউ, আইসিএক্স এবং মোবাইলে বা প্রাইভেট ফোন অপারেটরের মাধ্যমে হয়ে থাকে। তাই দেশে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার জন্য বিটিসিএলকে সুনির্দিষ্টভাবে দায়ী করা যায় না। বিটিসিএল অবৈধ ভিওআইপি কলের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নয়। তাছাড়া বিটিসিএল অবৈধ ভিওআইপির বিষয়ে নিয়মিত নিবিড় পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রেখেছে।

(ওএস/এসপি/জুন ০৮, ২০১৭)