বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশ রবিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে পিরোজপুর ও খুলনা থেকে আন্ত:জেলা ডাকাত দলের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে । তাদের কাছ থেকে বাগেরহাট চেম্বার নেতার প্রতিষ্ঠানের ছিনতাইকৃত ৫’লক্ষাধিক টাকাসহ একটি ওয়াকিটকি, ৩ জোড়া হ্যান্ডকাপ, ১টি খেলনা পিস্তল ও সটগান,  ১টি মোটরসাইকেল ও ছিনতাইকৃত ২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত হলো, আন্ত :জেলা ডাকাত দলের প্রধান ঝালকাঠি জেলার রাজাপুরের নারিকেল বাড়িয়া গ্রামের ইউসুব মৃর্ধার ছেলে মিজানুর রহমান (৩২), তার সেকেন্ডইন কমান্ড মাদারীপুর জেলার কালকিনির এনায়েতনগর গ্রামের সেলিম সরদারের ছেলে মো. মিলন (২১), ঝালকাঠি জেলার রাজাপুরের শুকতাঘর গ্রামের নজরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে মো. শাহাজাহান হাওলাদার (৪০), একই এলাকার নারিকেল বাড়িয়া গ্রামের আর্শারাফ আলম মৃর্ধার ছেলে আলম মৃর্ধা (৪৮) পটুয়াখালী জেলার দশমিনার উত্তর আজরবেড়ি গ্রামের আলম হোসেন প্যাদার ছেলে জামাল হোসেন ওরফে হাবিব (৩৮) মাদারীপুর জেলার কালকিনির উপজেলার পূর্ব আলীপুর গ্রামের ইসমাইল সরদারের ছেলে মো. আরিফ হোসেন (২৫ ) ও নড়াইল জেলা সদরের চরবিলঅ গ্রামের মো. আব্দুস সালাম মোল্লার চেলে মো. আশারোল মোল্লা (২৩)।
বাগেরহাট আন্ত:জেলা ডাকাত দলের ৭ সদস্য গ্রেফতারের পর সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা তার অফিসে সংবাদ সম্মেলন করেছেন । সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ২ জুন দুপুরে বাগেরহাট শহরের কেবি মাছ বাজার এলাকা থেকে জেলা চেম্বার অব কর্মার্সের দুই নেতা এমদাদ আলী পাইক ও মধুসুধন দামের যৌথ ব্যাবসায়িক প্রতিষ্টান বরকত অটো রাইচ মিলের দুই ম্যানেজার রুহুল আমিন ও প্রভাত সাহাকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে সন্ত্রাসীরা তাদের অপহরন করে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এরপর অপহৃত দুই ম্যানেজারকে মংলা- মাওয়া মহাসড়কের বাগেরহাটের ফলতিতা বাজারের কাছে হাত ও চোখ বাধা অবস্থায় তাদের মোবাইল ২টি নিয়ে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় । এঘটনায় মিলের অন্যতম মালিক মধুসুধন দাম বাগেরহাট মডেল থানায় মামলা দায়ের করে ।
মামলার সুত্র ধরে সদর মডেল থানার ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলী আজম খান গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার সদ্ধ্যায় পিরোজপুর জেলার ভেকুটিয়া ফেরিঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে আন্ত :জেলা এ ডাকাত দলের প্রধান মিজান , শাহজাহান ও আলমকে গ্রেপ্তার করে । গ্রেপ্তার কৃতদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে রাতভর খুলনা মহানগরির বিভিন্ন এলাকায় অভিজান চালিয়ে এডাকাত দলের সেকেন্ডইন কমান্ডার মিলন, হাবিব, আরিফ ও আশারোলকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার হয় বাগেরহাটের ২ মিল ম্যানেজারকে অপহরন করে ছিনিয়ে নেওয়া সাড়ে ১৩ লাখ টাকার মধ্যে ৫ লাখ ৫ হাজার ৩২৫ টাকাসহ ছিনতাই কাজে ব্যাবহৃত একটি ওয়াকিটকি, ৩ জোড়া হ্যান্ডকাপ, ১টি খেলনা পিস্তল ও সটগান, ১টি মটরসাইকেল ও ছিনতাইকৃত ২টি মোবাইল ফোন ।
পুলিশ সুপার আরো জানান এ আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্যরা পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে তারা এক বছর ধরে পদ্মার এপারে দেশের দক্ষিন -পশ্চিমাঞ্চলে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করে আসছিল। গত মাস তারা বাগেরহাটের ন্যায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে ৬ লাখ টাকা ছিনতাই করে । সোমবার ডাকাত দলের সদস্যরা একত্রিত হয়ে যশোরে বড় ধরনের অঘটন ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল । এ দলের প্রধান মিজান গত ২৫ মে নরসিন্দি কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দলকে ভারি করে। এ ডাকাতদলের পলাতক অপর সদস্য ও অপহরন এবং ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস উদ্ধারে পুলিশী অভিযান এখনও অব্যহত রয়েছে বলে পুলিশ সুপার দাবি করেন।
(একে/এএস/জুন ২৩, ২০১৪)