হেদায়েতুল ইসলাম বাবু,  গাইবান্ধা : গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে পুলিশ হেফাজতে রিপন চন্দ্র দাস নামে এক আসামীর মৃত্যুর ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানার তিন পুলিশ সদস্যসহ ৯ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা করা হয়েছে। নিহত রিপন চন্দ্র দাসের বাবা বাবলু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে রবিবার পলাশবাড়ী আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন, সুন্দরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রাজু আহম্মেদ, পুলিশ কনস্টেবল শাহানুর আলম, নার্গিস বেগম, স্থানীয় ইউপি সদস্য মমতাজ উদ্দিন, সুরিশ চন্দ্র, তার মেয়ে চম্পা রানী, আলম মিয়া, অমল চন্দ্র ও রতন চন্দ্র।

বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকে সামিউল হক সামি বলেন, আদালতের বিচারক জয়নাল আবেদীন মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসটিশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলা এজাহারে বাদি উল্লেখ করেন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হাতিয়া গ্রামের বাবলু চন্দ্র দাসের ছেলে রিপনের সঙ্গে প্রতিবেশি সুরেশ চন্দ্র দাসের মেয়ে চম্পার মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক ছিলো। গত ২৯ মে তারা দুজন বাড়ি থেকে পালিয়ে বগুড়ার কাহালুতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠে এবং বিয়ে করে। এ ঘটনায় চম্পার বাবা সুরিশ চন্দ্র বাদি হয়ে অপহরণের অভিযোগে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। পরে সুন্দরগঞ্জ থানার এসআই রাজু আহমেদের নেতেৃত্বে স্থানীয় ইউপি সদস্য মমতাজ আলীসহ সঙ্গীয় পুলিশ গোপন খবরে অভিযান চালিয়ে ১ জুন বগুড়ার কাহালুর থেকে চম্পাকে উদ্ধার ও রিপনকে গ্রেফতার করে। ওইদিনই তাদেরকে মাইক্রোবাসে করে কাহালু থেকে সুন্দরগঞ্জ থানায় নিয়ে আসা হচ্ছিলো। পথে পুলিশ ইউপি সদস্য মমতাজ উদ্দিনের পরোক্ষ সহযোগিতায় রিপনকে মাইক্রোবাসে গলাটিপে হত্যা করে পলশাবাড়ীতে রাস্তায় ফেলে দিয়ে দূর্ঘটনা হিসেবে চালানোর চেষ্টা করে।

এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রিপন বারবার পুলিশের কাছে প্রসাব করার জন্য কাকুতি মিনতি করছিলো। এক পর্যায়ে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার জুনদহ এলাকায় মহাসড়কের পাশে মাইক্রোবাস থামিয়ে প্রসাব করার সুযোগ দিলে রিপন দৌড়ে পালাতে গিয়ে দ্রুতগামী একটি ট্রাকের সাথে থাক্কা লেগে রাস্তায় পড়ে যায়। পরে তাকে পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিপনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পলাশবাড়ী থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়।

এ ঘটনার পর সুন্দরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রাজু আহম্মেদ, পুলিশ কনস্টেবল শাহানুর আলম, মোস্তাফিজার রহমান ও নার্গিস বেগমকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। এছাড়া ঘটনাটি তদন্ত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যর একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়।

(এইচআইবি/ওএস/জুন ১১, ২০১৭)