আল ফয়সাল বিকাশ, বান্দরবান : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিন্মচাপের প্রভাবে দু’দিনের অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে বান্দরবানের বন্যা দেখা দিয়েছে। প্রবল বর্ষনের কারণে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে সকালে রুমা-বান্দরবান সড়কের ওয়াইজংশন এলাকায় ২টি স্থানে পাহাড় ধ্বসে পড়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ ছাড়াও প্রবল বর্ষনের কারণে রাস্তায় বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় লামা-আলীকদম ও রাঙ্গামাটির সাথে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

পাহাড়ী ঢলে বান্দরবান সদরের আর্মী পাড়া, মেম্বার পাড়া, শেরে বাংলা নগর, মধ্যম পাড়া, উজানী পাড়া, ক্যউচিংঘাটা, ভরাখালীসহ শহরের ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়াও লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পাহাড়ী ঢলে তলিয়ে গেছে। সেখানকার লোকজন নৌকায় চড়ে চলাফেরা করছে। এতে শত, শত ঘর-বাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্টান ও ফসলী জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। প্লাবিত এলাকা গুলোর মধ্যে রয়েছে লামা পৌরসভার নয়া পাড়া,উপজেলা পরিষদের আবাসিক এলাকা সমুহ, লামা বাজারের একাংশ, নুনারবিল, লামা বাস স্ট্যান্ড ,লামা থানা এলাকা,লাইনঝিরি ,ছাগলখাইয়া, ফকির পাড়া, কলিঙ্গাবিল, হাসপাতাল পাড়া, শিলেরতুয়া ও চেয়ারম্যান পাড়া। এছাড়া পৌরএলাকার হলিচাইল্ড পাবলিক স্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও সরকারি, বেসরকারি দপ্তর সমুহ পাহাড়ী ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। অপরদিকে, গজালিয়া,রুপসী পাড়া ও ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসকল এলাকায় নদী তীরবর্তী ও ঝিরি সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। বন্যার আশংকায় স্থানীয়রা শংকিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল এবং উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তর সমুহ বন্যার আশংকায় মালামাল ও নথিপত্র নিরাপদে সরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

লামা-আলীকদম সড়কের লাইনঝিরি ও শিলেরতুয়া পয়েন্ট পাহাড়ী ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আলীকদমের সাথে চকরিয়া ও লামার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। লামা পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ হোসেন বাদশা জানিয়েছেন,পাহাড়ী ঢলের পানিতে তার এলাকা পুরোটায় প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জালাল উদ্দিন জানান, দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় তার এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে।

এদিকে প্রবল বর্ষণ অব্যহত থাকায় খরশ্রোতা সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত পরিবার গুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সর্তক করা হচ্ছে।

বন্যা ও পাহাড় ধ্বসের ঝুকিতে বসবাসরত অধিকাংশ পরিবার ইতিমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় গ্রহন করেছে।

(এএফবি/এএস/জুন ১২, ২০১৭)