বান্দরবান প্রতিনিধি : রাতে বৃষ্টি না হওয়ায় বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। দুর্গত এলাকায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা নিয়েছে। সড়ক থেকে জমে থাকা পানি নেমে যাওয়ায় বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। পাহাড় ধসে নিখোঁজ থাকা মা-মেয়ের লাশ উদ্ধারে আবারও উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ স্থানীয় লোকজন।

টানা ৩ দিনের প্রবল বর্ষণে বান্দরবানে এক ভয়াল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। একদিকে ব্যাপক হারে পাহাড় ধস অন্যদিকে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্বক অবনতি। গতকাল ভোর রাতে পাহাড় ধসে ৬ জনের মৃত্যু হয়। তারমধ্যে লাশ উদ্ধার হয়েছে ৪ জনের। বাকী মা-মেয়ে ২ জনের লাশ সারা দিন চেষ্টা চালিয়েও উদ্ধার করতে পারিনি ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। আজ বুধবার সকাল থেকে আবারো উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস কর্মী, সেনাবাহিনী ও স্থানীয় কয়েকশ মানুষ। তবে এখনো পর্যন্ত তাদের লাশ উদ্ধার করা যায়নি।

এদিকে রাতে বৃষ্টি না হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। মানুষ বাড়ী-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্টানের কাঁদা সরিয়ে ঘরে ঢুকতে শুরু করেছে। তবে বিভিন্ন এলাকায় ড্রেন ভরাটসহ দুর্গত এলাকায় পৌর সভার লোকজন না থাকায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এছাড়াও দুর্গত এলাকা গুলো কাঁদায় ভরে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকটে পড়েছে। পবিত্র রমজানের এই মৌসুমে পানি সংকট কাটিয়ে উঠার জন্য পৌর সভার গাড়ি দিয়ে খাবার পানি নিশ্চিত করার দাবী জানান দুর্গতরা।
অপরদিকে সড়ক থেকে বন্যার পানি সরে যাওয়ায় বান্দরবান-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। তবে ব্যাপক পাহাড় ধসের কারণে রাঙ্গামাটিসহ জেলার প্রত্যন্ত এলাকার সড়ক যোগাযোগ সম্পুর্ণ বন্ধ রয়েছে।

জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বণিক জানান, নিন্মচাপের কারণে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এতে বান্দরবান জেলায় ৬ জন মারা গেছে। ৫শত পরিবারের ২ হাজারের অধিক লোক বিভিন্ন আশ্রয়ন কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। সরকারের ও প্রশাসনের তরফ থেকে সকল ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি বলেছেন, যে সব মানুষ আহত হয়েছে তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে ঝুকিপুর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হয়েছে এবং তাদের জন্য যেখানে যা প্রয়োজন তা করা হচ্ছে।

এছাড়াও প্রশাসন, জেলা পরিষদ ও পৌরসভার পক্ষ থেকে খাবার বিতরণ করা হয়েছে। সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকেও শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে।

এবারের বন্যা ও পাহাড় ধসে জেলার ৭ উপজেলায় প্রায় ২০ হাজারের অধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বন্যা দৃর্গতদের মাঝে ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।


(এএফবি/এসপি/জুন ১৪, ২০১৭)