কাঞ্চন কুমার, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : শিক্ষা জীবনে প্রথামিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রত্যেকটা ছাত্রেরই একজন করে প্রিয় শিক্ষক থাকে। একেক জনের ছাত্রের মতবাদ একেক রকম। তবে ভিন্নতা রয়েছে শিক্ষক সালাউদ্দিনের বেলায়। প্রত্যেক ছাত্র ছাত্রীর প্রিয় শিক্ষক তিনি। সুন্দর ব্যবহার আর ছাত্রবান্ধব এবং অধ্যাবসায়ী হওয়ার কারনে বিদ্যালয়ের সকলের প্রিয় তিনি।

নম্রতা ও ভদ্রতার পরিচয় দিয়ে সহকর্মী ও প্রধান শিক্ষকের আস্থা অর্জন করেছেন তিনি। বলছিলাম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিমতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কারিগরি বিভাগের শিক্ষক সালাউদ্দিনের কথা।

উপজেলার কুষ্টিয়া-মেহেরপুর মহাড়কের নিমতলায় ১৯৯৩ সালে ১.৬৮ একর জমির উপরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে স্থাপিত হয় নিমতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বর্তমানে শিক্ষক, শিক্ষিকা ও কর্মচারী দিয়ে বিদ্যালয়টিতে রয়েছে ২২জন ষ্টাফ। সাড়ে ৫’শ ছাত্র/ছাত্রীদের মাঝে জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে রেখেছে এই বিদ্যালয়টি। প্রতিবছর এই বিদ্যালয় থেকে ভালো ফলাফল করে উচ্চ শিক্ষার জন্য চলে যায় শিক্ষার্থীরা।

বিশাল আকৃতির খেলার মাঠ, সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ, মসজিদ, টয়লেট, খাবার পানির ব্যবস্থা, সুন্দর ক্লাসরুম, বই সমৃদ্ধ পাঠাগার, ছাত্রীদের জন্য কমন রুম, কম্পিউটার ল্যাব ও ডিজিটাল ক্লাসরুমসহ বিনোদনের সব ধরনের ব্যবস্থা। রয়েছে শিক্ষাবৃত্তি ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুযোগ। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও রয়েছে বিদ্যালয়টির বেশ সুনাম।

শুরুতে সাধারন শিক্ষা চালু হয় এই বিদ্যালয়টিতে। তারপরে কারিগরি শিক্ষা দান শুরু হয় ২০০৪ সাল থেকে।

বিদ্যালয়টিতে কারিগরি শিক্ষার সুনাম অতুলনীয়। ৭জন শিক্ষক ও কর্মচারীর অক্লান্ত পরিশ্রমে ২০১৭ সালে ৫০জন পরীক্ষার্থী

পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৪জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। সেইসাথে শতকরা ৮৫% পাশ করেছে। বিদ্যালয়ের ছাত্র জিসান ও সাজন জানায়, আমাদের এই স্কুলে ভর্তি হতে কোন টাকা লাগে না। শিক্ষকরা আমাদের খুব ভালো করে পড়ায়। তারা আমাদের খুব আদর করে। আমরা আমাদের ক্লাসের পড়া ক্লাসেই তৈরী করি। এছাড়া আমাদের স্কুলে প্রতি বৃহস্পতিবার সংগীতের অনুষ্ঠান হয়।

শিক্ষক সালাউদ্দিন জানান, লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ করে। এখানে প্রাইভেট পড়ানো হয় না। কারণ আমরা ক্লাসের পড়া ক্লাসেই তৈরী করে দেয়। আমরা ছাত্রদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরনের মাধ্যমে পাঠদান করে থাকি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান জানান, বিভিন্ন জাতীয় দিবস যথাযর্থ মর্যাদায় আমরা পালন করে থাকি। নিয়মতি অভিভাবক সমাবেশ ও ম্যানেজিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া গরীব ও মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য বিনা বেতনে অধ্যায়নের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া আমরা মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত ক্লাস নিয়ে থাকি।


এলাকার সচেতন একজন নাগরিক সাইফুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়টি অত্র এলাকার মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে। এখান থেকে অনেক ছেলে মেয়ে লেখাপড়া শিখে আজ চাকুরী করছে। এ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য আমরা গর্বীত।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি একলেমুর রেজা সাবান জোয়ার্দ্দার জানান, দক্ষ ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়ে আসছে। আশাকরছি ভবিষ্যতেও এই বিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুন্য থাকবে।

আমলা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিদ্দিক আলী জানান, নিমতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এই এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম। যা লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন দিকের সুনাম রয়েছে।

(কেকে/এসপি/জুন ১৭, ২০১৭)