হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : হালুয়াঘাটে শিশু সন্তানকে ছুড়ে ফেলে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪ সন্তানের জননী। ধামাচাপা দিতে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ কতিপয় ব্যক্তির  সালিশ দরবার অনুষ্ঠিত।
ঘটনাটি উপজেলার গোপীনগর গ্রামে গত সোমবার (১৯ জুন) দিবাগত রাতে ঘটে।

জানা যায়, উপজেলার নড়াইল ইউনিয়নের গোপীনগর গ্রামে গত ১৯ জুন সোমবার দিবাগত রাতে ৪ সন্তানের জননীকে একই এলাকার সিরাজ আলীর পুত্র জামাল, ইদ্রিস আলীর পুত্র খাইরুল,জাকুর পুত্র এমদাদুল ও জয়নালের পুত্র ফরহাদ পালাক্রমে র্ধষণ করে।

ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ২১ জুন বুধবার দুপুরে স্থানীয় মৌলবীবাজারে অত্র এলাকার কথিত পুলিশের এস আই দাবীদার আব্দুল মান্নানের পুত্র বাচ্চু, আব্দুল লতিফ এর পুত্র মফিদুল,ফুল মাহমুদের পুত্র মফিজুল,আব্দুস সামাদের পুত্র আব্দুল হাই ও মেম্বার আরফান আলী ও মোস্তফা গণধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে সালিশে বসেন।

এ বিষয়ে ধর্ষিতার স্বামী জানায়, ঘটনার সময় তিনি মাছ ধরতে বাহিরে ছিলেন। গভীর রাতে তার মা মোবাইল ফোনে ঘাটনাটি জানালে তিনি বাড়িতে আসেন। পরে সমাধানের জন্য আরফানসহ উল্লেখিত ব্যক্তিদের চাপের মুখে তার স্ত্রীকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যায়। তার ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। ঘটনার দিন ১ বছরের শিশু সন্তান তার মায়ের সাথে ছিল। তিনি জড়িত ব্যক্তিদের নামে মামলা দায়ের করবেন বলে জানান।

এ ঘটনায় ধর্ষিতা অশ্রুসিক্ত কন্ঠে সাংবাদিকদের জানায়, ১ বছরের শিশু সন্তানকে ছুড়ে ফেলে জামাল,খাইরুল,এমদাদুল,ফরহাদ তার নিজ বাড়িতে তাকে ধর্ষণ করে। গণধর্ষণের পর তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সালিশের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টায় উল্লেখিত ব্যক্তিগণ তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যায়। সাংবাদিকদের নিকট ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ করলে ধর্ষিতার পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি প্রদান করছেন। তিনি ধর্ষকদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান।

অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। আরফান আলী মেম্বার জানায়, ঘটনাটি সমাধানের জন্য সালিশের আয়োজন করা হয়ে ছিল , কিন্ত সমাধান করতে পারেন নি।

এ ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাচ্চুর নেতৃত্বে সালিশের মাধ্যমে কিছু ব্যক্তি গণধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে। বাচ্চু পুলিশের দারগা মসিউর হিসাবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ড করে আসছেন। তারা ধর্ষকদের শাস্তির দাবি জানায়।

এ বিষয়ে অফিসার ইনচার্জ কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, ধর্ষিতা নারী থানায় অবস্থান করছেন। তিনি কোন অভিযোগ পাননি ,অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। বাচ্চু নামে অত্র থানায় কোন পুলিশ অফিসার নেই বলে জানান।

(জেসিজি/এসপি/জুন ২২, ২০১৭)