স্টাফ রিপোর্টার : তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, আমরা যেহেতু বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসেছি, বিচার করছি। সেখানে দুর্নীতির সংস্কৃতি থেকেও বেরিয়ে আসতে হবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসক কথা বলেন।

ইনু বলেন, ব্যাংক ও এতিমদের টাকা আত্মসাৎ করে বেগম খালেদা জিয়ার মতো অপরাধীরা জামিন পেয়ে আদালত থেকে বিজয়ের চিহ্ন দেখিয়ে হাসতে হাসতে বেরিয়ে আসেন। এটা জাতির জন্য লজ্জার বিষয়। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, একদিকে বলবেন চমৎকার উন্নতি হচ্ছে অন্যদিকে আবার অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলবেন ব্যর্থ অর্থমন্ত্রী, এটা যায় না কিন্তু। অর্থনীতি যদি সফল হয় আমাদের অর্থমন্ত্রীও সফল। নিশ্চয় আমাদের প্রধানমন্ত্রী মধ্যবিত্তের কথা চিন্তা করে আবগরি শুল্ক নিয়ে বিবেচনা করবেন।

বাজেটের দুর্বলতার বিষয়গুলো উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষি রাজস্ব কম হচ্ছে, সমবায় অবহেলিত, হাওরের গুরুত্ব দিলেও চরাঞ্চল, বিল ও পাহাড়ের গুরুত্ব একটু কম দেয়া হচ্ছে, ব্যাংকের লুটপাট অব্যাহত রয়েছে, দুর্নীতির সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে।

দেশে সুশাসন দরকার মন্তব্য করে ইনু বলেন, দেশের অর্থনীতিকে আরেক ধাপ এগুতে হলে দরকার হবে সুশাসন। সুশাসন থাকলে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়বে। আর ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ বাড়লে দেশের অর্থনীতি আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ সুশাসন নিশ্চিত করবেন। এটা দুর্নীতি কমাবে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াবে। যারা পূর্বের ভ্যাট আইনের কথা পুনর্বহালের কথা বলেন তারা বুঝে বলেন না।

গণমাধ্যমের বিকাশের ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে প্রস্তাবিত বাজেটে সংবাদপত্র শিল্পের উপর আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। এ ছাড়া আবগারি শুল্কের ক্ষেত্রে পূর্বের অবস্থা বহাল না করে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক আমানত আবগারি শুল্কমুক্ত রাখার প্রস্তাব করেন এবং সঞ্চয়পত্রের সুদের হার পুনর্বিবেচনারও আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়নে সর্বোচ্চ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে। জ্বালানি শক্তি বৃদ্ধির জন্য যথার্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেয়ার সময় দেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। এর আগের সামরিক সরকারগুলো দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে মনোযোগ দেয়নি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার সেই অন্ধকার থেকে জাতিকে আলোতে নিয়ে এসেছেন। এ ছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। রাজনৈতিক যুদ্ধ হচ্ছে জঙ্গি ও জঙ্গির সঙ্গীকে ক্ষমতার বাইরে রাখা। অর্থনৈতিক যুদ্ধ হচ্ছে সমৃদ্ধি অর্জনের যুদ্ধ। ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করার যুদ্ধ। এই দুই যুদ্ধের মধ্যেই অর্থমন্ত্রী বাজেট দিয়েছেন। এই বাজেটকে যুদ্ধের চশমা দিয়ে দেখে বিশ্লেষণ করা উচিত।

(ওএস/এসপি/জুন ২২, ২০১৭)