শরীয়তপুর প্রতিনিধি : লিবিয়ার বেনগাজীতে ক্ষেপনাস্ত্রের হামলায় শরীয়তপুরের দুই প্রবাসী সহোদরের মৃত্যুর খবরে তাদের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের গোসাইরহাটের সাবেরপাড়া গ্রামে শোকের মাতম চলছে।

পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য দুই ছেলে স্বপন ও মিলনকে বিদেশে পাঠিয়ে এখন বাকরূদ্ধ পরিবারের সদস্যরা।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জীবিকার প্রয়োজনে ২০১০ সালের প্রথম দিকে মিশর যান শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের সাবেরপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস ছৈয়ালের ৬ ছেলে আর ১ মেয়ের মধ্যে চতুর্থ সন্তান মিলন (২৫) ছৈয়াল। এরপর ২০১২ সালে একই পথে পাড়ি জমান বড় ভাই স্বপন ছৈয়ালও। এরপর লিবিয়ায় গাদ্দাফি সরকার পতনের পর একটি খনিজ পানীয় জলের কারখানায় কাজ নিয়ে দুই ভাই মিশর ছেড়ে চলে যান

লিবিয়ার বেনগাজী শহরে। পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতা দূর করার জন্য সেখানে কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রোজগার শুরু করেছিল দুই ভাই। কিন্তু রবিবারের ক্ষেপনাস্ত্রের হামলায় দুই সহোদরের আকস্মিক মৃত্যতে ঘোর অনিশ্চয়তায় এখন তাদের পরিবার।

প্রতিদিনের মতো রবিবার দুপুরেও বেনগাজী শহরে ভাড়া বাসায় বসে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন দুই ভাই। হঠাৎ একটি শব্দ। আর মুহুর্তেই ছিন্নভিন্ন দুই ভাই। ক্ষেপনাস্ত্রের হামলায় মৃত্যু ঘটে তাদের। আহত হয় আরো দুই সহকর্মী। নিহত স্বপন ছৈয়ালের মালেকা বেগম বলেন, এক মাস বয়সী তাদের একমাত্র পুত্র সাব্বিরকে রেখে বিদেশে যায় তার বাবা। ছেলেটার বয়স এখন আড়াই বছর। পিতার আদর সোহাগ কাকে বলে সেটা পাওয়া হলোনা আমার এই অনাথ সন্তানের। আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাই, আমার এতিম সন্তান যেন তার মৃত বাবার মুখটি একবার দেখতে পারে সেই ব্যবস্থা করে।

নিহত স্বপন ও মিলনের মা মুর্শেদা বেগম বাবা কুদ্দুস ছৈয়ালও তাদের নিহত ২ সন্তানের মরদেহ দ্রুত দেশে আনার জন্য অনুরোধ করেছেন সরকারের কাছে। শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক রাম চন্দন জানিয়েছেন, পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসনকে লিবিয়ায় দুই সহোদরের মৃত্যুসম্পর্কে এখনো কিছু জানানো হয়নি। কবে কি ভাবে নিহতদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে এ বিষয়ে প্রশাসন কিছুই জানে না।

(এনআই/জেএ/জুন ২৪, ২০১৪)