বেরোবি প্রতিনিধি : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) একমাত্র ছাত্রী হল চালুর প্রায় চার বছর এবং দুইটি ছাত্র হল চালুর প্রায় দুই বছর পার হলেও এখনো দেয়া হয়নি হল তিনটির আবাসিক পরিচয়পত্র। পরিচয়পত্রের জন্য নির্ধারিত টাকা নেয়ার পরেও পরিচয়পত্র না দেয়ায় হল প্রশাসনের চরম উদাসীনতাকে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা।

ফলে প্রশাসনিক প্রয়োজন কিংবা অন্য কোনো শনাক্তকরণ কাজে পরিচয়পত্র দেখাতে পারছেন না তিনটি হলের সাত শতাধিক আবাসিক শিক্ষার্থী। আর এতে দৌরাত্ম্য বেড়েছে হলের অবৈধদের। পরিচয়পত্র না থাকায় চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না হলের বৈধ-অবৈধ শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসন সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ১৪ জুলাই ছাত্রীদের জন্য প্রথম আবাসিক শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল চালু করা হয়। অপরদিকে ছাত্রদের আবাসিক হল হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল চালু হয় ২০১৫ সালের ৭ অক্টোবর। একই বছরের ২৮ অক্টোবর চালু করা হয় শহীদ মুখতার এলাহী হল। হল চালুর এ দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও আবাসিক পরিচয়পত্র প্রদানে হল প্রশাসনের কোনো ভ্রূক্ষেপই নেই।

এতে যেমন প্রশাসনিক বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের; একই সঙ্গে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বৈধ হয়েও হলের আবাসিক পরিচয় না পাওয়া শিক্ষার্থীরা। হল প্রশাসন বারবার হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের হওয়ার নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক ছাত্রী কল্যাণী রায় জানান, সন্ধার পর ক্যাম্পাসে কোথাও বিপদে পড়লে নিজেদের হলের আবাসিক প্রমাণিত করতে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। এছাড়া বিশেষ দিনগুলোতে হলে ভালো খাবার ব্যবস্থা হলেই অনাবাসিকদের চাপে খাবার পাওয়াই দুষ্কর হয়ে যায়।

ক্ষোভ প্রকাশ করে ছাত্র হল দুইটির একাধিক ছাত্র জানান, বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসনকে একাধিকবার অভিযোগ করলেও বিষয়টি প্রশাসন কানেই তুলছে না। নানা রকম ফি ধার্য করতে হল প্রশাসনের ব্যস্ততা থাকলেও আবাসিক পরিচয়পত্র প্রদানের বেলায় প্রশাসনের যত গড়িমসি।

পরিচয়পত্র প্রদানের ব্যাপারে জানতে চাইলে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ ড. আবু সালেহ মোহাম্মদ ওয়াদুদুর রহমান বলেন, আবাসিক পরিচয়পত্র অত্যন্ত জরুরি।

তবে কেন এতদিনেও তা প্রদান করা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাবেক উপাচার্যকে একাধিকবার এ বিষয়ে জানিয়েছিলাম। তবে নতুন উপাচার্যকে এখনো বিষয়টি জানানো হয়নি।

এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ কমলেশ চন্দ্র রায় বলেন, পরিচয়পত্র প্রদানের চেষ্টা চলছে। তবে কবে নাগাদ দেয়া হতে পারে তা জানাতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি তিনি তার একান্ত সচিবকে অবগত করতে বলেন।

উপাচার্যের একান্ত সচিব মো. আমিনুর রহমান বিষয়টি হল প্রশাসনকে জানাবেন বলে জানান।

(ওএস/এসপি/জুলাই ০৪, ২০১৭)