রাবি প্রতিনিধি : ছবি তোলার সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককে মারধর করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের স্বীকার আরাফাত রহমান ডেইলি স্টারের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষর্থী। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।

মারধরকারী ছাত্রলীগ নেতারা হলেন সহ-সভাপতি আহমেদ সজীব, সাংগাঠনিক সম্পাদক আবিদ আহসান লাবণ ও আইন বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে দেশ ট্রাভেলস (ঢাকা মেট্রো-১১-১৩০১) বাসটি ছাত্রলীগ নেতা আহমেদ সজীব, আবিদ আহসান লাবণ, সাইফুল ইসলাম বিজয়সহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মী ভাঙচুর করে। ভাঙচুরের ছবি তোলার সময় আরাফাতের সঙ্গে ওই নেতাকর্মীদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তারা আরাফাতকে বেধড়ক মারধর করে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে আরাফাতকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু ডান চোখের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

দেশ ট্রাভেলসের রাজশাহী কাউন্টারের ইনচার্জ মাসুদ রানা জানান, ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম বিজয় চট্টগ্রাম থেকে দেশ ট্রাভেলসে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছিলেন। বিজয়কে বাসের মধ্যে ধূমপান করতে না দেওয়ায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার ঝামেলা হয়। পরে বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আসলে বিজয়সহ অন্যান্য ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মিলে বাসটি ভাঙচুর করে। এসময় বাসটির ড্রাইবার ও সুপারভাইজারকেও মারধর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি ও দৈনিক জনকণ্ঠের রাবি প্রতিনিধি কায়কোবাদ আল মামুন বলেন, ভাঙচুরের ছবি তোলায় তাকে মারধর করা হয়েছে। ডান চোখে ও মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন আরাফাত।

ছাত্রলীগ নেতা সজীব বলেন, বিজয়ের সঙ্গে বাসে একটু ঝামেলা হয়েছিল। পরে বিজয় ফোন করে আমাদের ডাকে। আমরা ১০/১২জন মিলে সেখানে যায়। তবে বাস ভাঙচুর ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা’ করেছে।

ছাত্রলীগ নেতাদের সাংবাদিককে মারধরের ঘটনা অস্বীকার করলেও একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী নিশ্চিত করে বলেন, ওই সাংবাদিককে সজীব, বিজয়, লাবণসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মী বেধড়ক মারধর করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া জানান, ‘আরাফাত নামের ওই সাংবাদিককে কোনো ছাত্রলীগনেতাকর্মী মারধর করেনি। তাকে এক পুলিশ কনস্টেবল মারধর করেছে। এখন সেই দায়ভার ছাত্রলীগের ওপর চাপানো হচ্ছে।’

তবে মতিহার থানার পরিদর্শক মাহাবুব আলম বলেন, ‘যতোটুকু শুনেছি কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী বাস ভাঙচুর এবং ওই সাংবাদিককে মারধর করেছে।’

(ওএস/এসপি/জুলাই ১০, ২০১৭)