স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর মোহাম্মদপুর-আদাবর নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। টানা দুই বার তিনি এই আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছেন। টানা নৌকা প্রতীকে তৃতীয়বার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। তবে এবার দলের ভেতরেই তাকে লড়তে হবে মনোনয়নের জন্য। কারণ ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান এবং সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনও আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী।

এরই মধ্যে তিন নেতার অনুসারীরা এলাকায় সক্রিয় হয়েছেন। নানাভাবে নিজের আগ্রহের কথা দলের নেতা-কর্মীদেরকে জানিয়েছেন। তিন জনেই আশা করছেন, মনোনয়নের জন্য তাকেই বেছে নেবেন শেখ হাসিনা।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে এই আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে জিতেন যুব লীগের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি।

নানকের অনুসারীরা বলেন, ঢাকা-১৩ আসনের উন্নয়নের রূপকার হলেন বর্তমান সংসদ সদস্য। তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েই মোহাম্মদপুর-আদাবরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছেন। এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলেন। এছাড়াও নেতাকর্মীদের সময় দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, ‘নানক ভাই দলের দুঃসময়ের নেতা। দল যখন বিরোধীদলে ছিলো তখন তিনি যুবলীগের চেয়ারম্যান ছিলেন। আন্দোলন সংগ্রামে তাকে সবসময়ই আমরা মাঠে পেয়েছি। দলের দুঃসময়ের এ সৈনিককে আগামীতেও মূল্যায়িত হবে আমরা আশা করি।’

তবে নানককের ব্যক্তিগত সেল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আর নানককে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান মোহাম্মদপুর এলাকার কাউন্সিলর ছিলেন দীর্ঘদিন। এই পদে থাকাকালেও তিনি মোহাম্মদপুর এলাকার উন্নয়নে করেছেন। দীর্ঘদিন এলাকায় রাজনীতি করায় তার জনপ্রিয়তাও রয়েছে।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের একজন নেতা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সাদেক ভাই এলাকার মানুষের সুখে দুঃখে পাশে আছেন। নেতাকর্মীদের সাথেও তাঁর ভালো সম্পর্ক রয়েছে। নেতা-কর্মীদের যেকোন সমস্যা তিনি হাসি মুখে সমাধান করেছেন।

এই নেতা বলেন, ‘১/১১ সময়ে তিনি নেত্রী মুক্তি আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। সেসময় তিনি রাজপথে সক্রিয় ছিলেন। আন্দোলন সংগ্রামের পরিচিত মুখ সাদেক ভাইকে আগামী নির্বাচনে দল মূল্যায়ন করবে বলে আমরা আশা করি।’

জানতে চাইলে সাদেক খান বলেন, ‘মানুষের জন্য রাজনীতি করি। নেত্রী যদি আমাকে নির্বাচন করতে বলেন আমি নির্বাচন করবো। কিন্তু নেত্রী, দল যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমি সেই অনুযায়ী কাজ করব।’

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে বিজয়ী (তখন ছিল ধানমন্ডি-মোহাম্মদপুর আসন) আওয়ামী লীগের নেতা মকবুল হোসেনও নানাভাবে আবার নির্বাচনে আগ্রহী বলে তার অনুসারীরা জানিয়েছেন। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি হেরে যাওয়ার পর অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। তবে গত অক্টোবরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের পর তাকে দলের উপদেষ্টাপরিষদে জায়গা দেয়ার পর আবারও এলাকায় নানা কর্মসূচিতে নিজের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছেন।

এলাকায় মকবুল হোসেন শিক্ষানুরাগী ও দানবীর হিসেবে পরিচিত। তিনি একাধিক স্কুল-কলেজ করেছেন, সেগুলো নগরীর অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তার হাসপাতাল এবং বিমা ব্যবসাও রয়েছে।

আগামী নির্বাচনে আবার মনোনয়ন চাইবেন কি না-এ বিষয়ে জানতে চাইলে মকবুল হোসেন বলেন, ‘মনোনয়নের বিষয়টি টু আর্লি, ঢাকা মহানগরে যা কিছু হবে নেত্রীই সিদ্ধান্ত নেবেন। নেত্রী সার্বক্ষণিক জানেন কোন আসনে কার কী অবস্থা।’তিনি বলেন, ‘আমি রাজনীতিতে আছি। আর নির্বাচন করলে তো মোহাম্মদপুর থেকেই করব।’

(ওএস/এসপি/জুলাই ১১, ২০১৭)