‘পুরুষরা ঘরে-বাইরে নির্যাতিত, প্রকাশ করতে পারছে না’
স্টাফ রিপোর্টার : এবার পুরুষ নির্যাতন দমন আইনের দাবি জানিয়েছে পুরুষ নির্যাতন প্রতিরোধ আন্দোলন নামের একটি সংগঠন। সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ খায়রুল আলম বলেন, পুরুষ নির্যাতন দমন আইন না থাকায় পুরুষরা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হওয়ার পরও আইনের সহযোগিতা পাচ্ছে না।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানান তিনি। মানববন্ধনে এক নির্যাতিত পুরুষ দাবি করেন, তার স্ত্রী পরকীয়ায় আসক্ত। এজন্য তার জমি বিক্রি করে টাকা দাবি করেন। টাকা না দেয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন দিয়ে তাকে মারপিট করেছেন স্ত্রী। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও উল্টো থানা পুলিশ তাকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন দিয়ে জেলে পাঠানোর হুমকি দেয়।
পুরুষ নির্যাতনের ভয়াবহতা তুলে ধরে খায়রুল আলম বলেন, ‘পুরুষরা আজ ঘরে-বাইরে নির্যাতনের শিকার। কিন্তু আত্মসম্মানের জন্য সেসব প্রকাশ করতে পারছেন না। অনেকে আবার সম্পত্তি গ্রাস করার জন্য প্রতিপক্ষের স্ত্রীকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। যার জ্বলন্ত প্রমাণ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরিফুল ইসলাম।’
মানববন্ধনে স্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করে আরিফুল ইসলাম বলেন, তার স্ত্রী তাকে হুমকি দিচ্ছেন নিজের নামে সম্পত্তি লিখে না দিলে সন্তানদের হত্যা করবেন। সন্তানের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তিনি তিন সন্তান নিয়ে ঢাকার রাস্তায় রাত যাপন করছেন।
আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমার স্ত্রী জায়গা-জমি দখল করে নিতে চায়। আমার বাড়ি ভাঙচুর করে এলাকা থেকে বিতাড়িত করে দিয়েছে। আমি এলাকায় গেলে আমাকে ইয়াবা, জঙ্গিবাদ আর যৌতুকের মামলায় ফাঁসিয়ে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে।’
আরিফুল বলেন, ‘আমার সম্পত্তি কব্জা করার জন্য প্রতিবেশীরাও আমার স্ত্রীকে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। আমার স্ত্রী প্রায় সময় আমাকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে কোথায় যেন বের হয়ে যায়, শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে জানতে চাইলে তারা আমাকে মারধর করে বের করে দেয়। বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা করলেও কোনো প্রতিকার পাইনি। উল্টো আমাকে পুলিশ নারী শিশু নির্যাতনের মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বাঞ্ছারামপুর থানার এস আই শাহ আলম বলেন, ‘আসলে আরিফুলের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখেছি, তিনি তার স্ত্রীকে মারধর করেন, এ কারণে তার স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে গেছেন। আর তিনি আমার মনে হয় মানসিক সমস্যায় ভুগছেন।’
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই এলাকার ইউপি সদস্য শফিক বলেন, ‘তাদের ২০ বছরের সংসার। তাদের সংসারে অশান্তি দীর্ঘদিনের। আমরা এলাকাবাসী মিলে বিচারও করে দিয়েছি, তারপরও সে তার স্ত্রীকে মারধর করে। এ কারণে তার স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে গেছে। সে তার স্ত্রীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করত। এজন্য স্ত্রী তাকে ভয় পায় না। সুযোগগুলো সেই দিয়েছে। গ্রাম্য শালিসে রায় দেয়া হয়েছিল স্ত্রীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন না করতে। এরপরও নির্যাতন করত। তার সংসারের এমন অবস্থা হয়েছে যে, সপ্তাহে তিন তিন ভালো গেলে দুই দিন খারাপ যায়।’
(ওএস/এসপি/জুলাই ১২, ২০১৭)