রাজন্য রুহানি, জামালপুর : পাহাড়ি ঢল ও ৫ দিনের টানা বর্ষণে জামালপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক আব্দুল মান্নান। জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় জেলার ৫৫টি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা শিক্ষা অফিস।

যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ঝিনাই, সুবর্ণখালি ও জিঞ্জিরামসহ অন্যন্য নদনদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় অবনতি হয়েছে সার্বিক বন্যাপরিস্থির। এসব নদীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি যমুনার। ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ির উপজেলার নতুন নতুন এলাকাসহ বন্যা কবলিত হয়ে পড়ছে বিস্তীর্ণ জনপদ। প্রবল পানির তোড়ে সড়ক ধ্বসে যাওয়ায় এবং পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ইসলামপুর-গুঠাইল, ইসলামপুর-উলিয়া, মেলান্দহ-মাহমুদপুর সড়ক যোগাযোগ। কলার ভেলা ও নৌকা দিয়ে যোগাযোগ করছে বন্যার্তরা। পানি ঢুকে পড়েছে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে। পানিবন্দি মানুষেরা ঘরে মাচা করে কোনো রকম মাথা গুঁজার ঠাঁই নিলেও গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে বন্যাদুর্গত মানুষেরা।

অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে, বাঁধে, মহাসড়কের পাশে, উঁচু ভবনে আশ্রয় নিয়েছে বানভাসীরা। চরপাশে পানি উঠায় চরম সংকট দেখা দিয়েছে গোখাদ্যের। এদিকে বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা চোখে পড়ে নি বলেও অভিযোগ করেছেন বন্যাকবলিত এলাকার লোকজন। ত্রাণের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে ভানবাসীদের। শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইনের জরুরি প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমির বীজতলা, রোপাআমন, পাট, আখ,সবজীসহ নানা ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবির উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে বলেন, জেলার ৪ উপজেলায় ৯০ মেট্রিক টন চাল, নগদ এক লাখ ২০ হাজার টাকা, ৩ হাজার ২’শ শুকনো খাবার প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আজ থেকে বরাদ্দ বাড়ানো হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

(আরআর/এএস/জুলাই ১২, ২০১৭)