মেহেরপুর প্রতিনিধি : অব্যাহত দর পতনের ফলে মেহেরপুরের পেঁয়াজ চাষিরা দিশেহারা। তারা সড়কের উপর পেঁয়াজ ফেলে প্রতিবাদ জানিয়েছে।

শুক্রবার সকালে মেহেরপুর শহরের উপকন্ঠে বামনপাড়ায় মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কের উপরে বস্তা বস্তা পেঁয়াজ ফেলে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট করে এ প্রতিবাদ জানায় চাষিরা। এ সময় পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্যের দাবিতে চাষিরা শ্লোগান দেয়। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা জানান, প্রতি বছর পেঁয়াজ উত্তোলনের সময় ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। ফলে বাজার দর কমে যাওয়ায় লাখ লাখ টাকা লোকসান গুণতে হয় চাষিদের। এ বছরও হাজার হাজার চাষি লোকসানের মুখে পড়েছে।

বামনপাড়া গ্রামের চাষি আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ বছর তিনি প্রায় এগার লাখ টাকা খরচ করে ২৬ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছিলেন। বর্তমানে ৩০০ টাকা মণ দরে পেঁয়াজ বিক্রি করে তাকে তিন লাখ টাকা লোকসান গুণতে হবে। একই গ্রামের আহসান হাবিব জানান, তিনি ৩২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করে আড়াই লাখ টাকা লোকসান গুণেছেন। শাহাদ খান জানান, ইসলামী ব্যাংক থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে পেঁয়াজের চাষ করেছিলেন। কিন্তু পেঁয়াজ বিক্রি করে খরচটাও ওঠেনি। এখন কী করে ঋণ পরিশোধ করবেন তা নিয়ে চিন্তিত তিনি। আসাদুল হক বলেন, এক মণ পেঁয়াজ উৎপাদন করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ৩৫০ থেকে ৩৭৫ টাকা। বর্তমানে প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা দরে। ফলে চাষিরা লোকসান গুণতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অনেকের পেঁয়াজ বিক্রি করতে না পেরে পচে নষ্ট হচ্ছে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে দুই হাজার পঞ্চান্ন হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। যার মধ্যে এক হাজার ছয়শ’ বত্রিশ হেক্টর শুকসাগর জাতের পেঁয়াজ। শুকসাগর জাতের পেঁয়াজের ফলনও হয় বেশ ভাল। প্রতি বিঘা জমিতে এক থেকে দুই’শ বিঘা পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। কিন্তু এ বছর বৈরি আবহাওয়ার কারণে ফলন ভাল হয়নি। তার উপর বাজার দর কম হওয়ায় চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়েছে।

(ওএস/এপ্রিল ১১, ২০১৪)