জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে এক কলেজ ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, তার ছেলে ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাত ১০টায় জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করেছে নির্যাতিতার বাবা গোলাম মস্তোফা। ধর্ষকের বিচারের দাবিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে জামালপুরের সচেতন নাগরিকেরা।

মামলা ও নির্যাতিতার পারিবারিক সূত্র জানায়, কোচিংয়ে এক সাথে পড়ার সুবাদে জামালপুর শহরের একটি সরকারি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী (২১)র সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে শহরের নয়াপাড়ার মেহেদী হাসান প্রান্ত। সম্পর্কের ৬ মাসের মাথায় ৩০ জুন বিকেলে প্রান্ত ওই কলেজ ছাত্রীকে জানায় তাঁর মা দেখা করতে বলেছে। প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ফাঁকা বাড়িতে মেয়েটির হাত-পাঁ বেঁধে জোরপূর্বক ধর্ষন কওে প্রান্ত। পরে ছেলের মা লিপি বেগম বাড়িতে উপস্থিত হয়ে উল্টো মেয়েটিকে রাতভর মারধর করে। পরদিন সকালে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ছেলের বাবা মাদারগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খোরশেদ আলম জামালপুর পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলরসহ ৪ কাউন্সিলরকে ডেকে এনে। সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর লিপি বেগম দ্বিতীয় দফায় মেয়েটিকে মারতে মারতে বাড়ি থেকে বের করে। কাউন্সিলররা বেশ কয়েকটি কাগজে জোরপূবর্ক মেয়ে ও তার বাবামার স্বাক্ষর নেয়। কথিত বিচার শালিসে মেয়ের বাবার হাতে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা গুঁজে দেয় এবং বিভিন্ন মহল ম্যানেজের নামে প্রায় কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে শালিসকারীদের বিরুদ্ধে। নির্যাতিতার বাবা গোলাম মস্তোফা রাস্তায় রাস্তায় ভুড়ি (বুট) বিক্রি করে। তার বাড়ি শহরের চালাপাড়ায়। নির্যাতিতার দরিদ্র পরিবার প্রভাবশালীদের নজরদারিতে ৯ দিন থাকার পর মানবাধিকার কর্মীদের সাথে দেখা করে। ধর্ষকের পরিবারের জোরপূর্বক দেয়া টাকা রক্ষিত রেখেছে জানিয়ে মানবাধিকার কর্মীদের কাছে লোমহর্ষক ঘটনা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

মানবাধিকার কর্মীরা পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্বিক) রওনক জাহানের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি নজরে আনলে অবশেষে নির্যাতনকারী ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাছিমুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে মামলা দায়েরের খবরটি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

(আরআর/এএস/জুলাই ১৩, ২০১৭)