হুমায়ুন কবির জীবন, কুমিল্লা : চিকুনগুনিয়া আতঙ্কে সারাদেশের মতো কুমিল্লাবাসী আতঙ্কিত হলেও কুমিল্লায় চিকুনগুনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এমন রোগীর সন্ধান মিলেনি। এমন ধরনের সংবাদও পাওয়া যায়নি। এ রোগ প্রতিরোধে ইতিমধ্যে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং বাস্তবায়নের কাজও শুরু হয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে এ রোগের বা জ্বরের উৎপত্তি ও এ রোগ থেকে পরিত্রাণ ও প্রতিরোধ বিষয়ে ইতোমধ্যে জনসচেতনার লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে মহানগরের বিভিন্ন স্থানে মশানাশক ওষুধ ছিটানো হয়েছে।

কুমিল্লায় চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন এমন রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে কিনা ? এমন প্রশ্নের উত্তরে কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান জানান, কুমিল্লায় সরকারি-বেসরকারি কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকুনগুনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এমন রোগী আসেনি বা ভর্তি হয়নি। এ রোগে আক্রান্তদের দ্রুত সেবার লক্ষ্যে কুমিল্লায় একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কুমিল্লা সদর হাসপাতালে আরএমও রুমের পাশে একটি হেল্প ডেস্ক রয়েছে।

কুমিল্লায় এ রোগ প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা ? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার লক্ষ্যে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে কুমিল্লার সকল উপজেলা ও মহানগর এলাকায় জনগণের মাঝে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। সকল উপজেলায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে সকল ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও আগামী ১৮ জুলাই রাত ৮টায় কুমিল্লা টাউন হলে এ রোগ ঘিরে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।

কুমিল্লায় চিকুনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধ ও মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ইতোমধ্যে মহানগরের ২৭টি ওয়ার্ডে মশানিধন ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম শুরু করেছে। এ ব্যাপারে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন সচিব মো: হেলাল উদ্দিন জানান, চিকুনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধে কুমিল্লঅ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নতুন ক্রয়কৃত একটি ফগার মেশিন দিয়ে মশা নির্ধন ওষুধ ‘রিপকর্ড’ ছিটানো হচ্ছে। এ কাজের গতি বাড়ানোর জন্য পুরাতন যেসব মেশিন অকেজো হয়ে পড়েছিল তা মেরামতের জন্য দেয়া হয়েছে। এছাড়া সপ্তাহখানের মধ্যে আরও ৩টি ফগার মেশিন কেনা হবে।

তিনি বলেন, মশানাশক ওষুধ ছিটানোর কাজে প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরগণ সার্বিক সহযোগিতা করছেন।

চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্তের প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, এ জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের শরীরের তাপমাত্র ১০৪-১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট হতে পারে। অস্থিমজ্জাসহ শরীরের সকল জায়গায় প্রচ- ব্যথা অনুভব হবে। একসঙ্গে পাতলা পায়খানা, বমি ও খাবার অরুচি দেখা দিবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাসের পর মাসও অস্থিসন্ধিতে ব্যথা থাকতে পারে। এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে প্রাথমিক পর্যায়েই চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করে চিকিৎসা সেবা নেয়ার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান।

এদিকে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ১৭, ১৮সহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে গতকাল পর্যন্ত কোনো মশানিধনজাতীয় ওষুধ ছিটানো হয়নি বলে জানিয়েছেন এসব ওয়ার্ডের এলাকাবাসী।

(এইচকেজে/এএস/জুলাই ১৪, ২০১৭)