লিটন শরীফ, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের বড়লেখায় প্রশাসনের তৎপরতায় ৭ম শ্রেণীর এক ছাত্রীর (১৩) নিশ্চিত বাল্যবিয়ে পন্ড হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমান আদালতের পরিচালনার খবর পেয়ে বিয়ের আসর থেকে কনেকে নিয়ে বাবা পালিয়ে যান। পরে মধ্যপথ থেকে বর ও কাজী সটকে পড়েন। তবে বিয়ের অতিথি ও বরযাত্রীরা কমিউনিটি সেন্টারে পৌছে গেলে তারা বর-কনে ও বিয়ে ছাড়াই ভুরিভোজ করেন। ঘটনাটি ঘটেছে  শুক্রবার(১৫ জুলাই)   বড়লেখা শহরের সোনারগাঁ নামক কমিউনিটি সেন্টারে।

জানা গেছে, বড়লেখা বাাজারের ব্যবসায়ী বাবা চুনু মিয়া ও মা ছালমা বেগম তাদের স্কুল পড়–য়া সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী শাহনাজ আক্তার রুমির (১৩) সাথে বিয়ানীবাজার উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের মৃত বশির আলীর ছেলে শাহ আলম কবির বিপ্লবের সাথে বিয়ে ঠিক করেন। শুক্রবার বড়লেখা পৌর শহরের সোনারগাঁ কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের দিন নির্ধারণ করে প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন কনে পক্ষের লোকজন।

অপেক্ষার পর বর সেন্টারে এসে আকদ করে কনেকে তুলে নিয়ে যাবে। কিন্তু বাধঁ সাধল প্রশাসন। ভ্রাম্যমান আদালতের পরিচালনার জন্য শুক্রবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) সমীর বিশ্বাস, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সহিদুর রহমান ও গণমাধ্যম কর্মীরা কমিউনিটি সেন্টারে উপস্থিত হওয়ার আগেই বিয়ের মঞ্চ থেকে কনেকে নিয়ে পালিয়ে যান বাবা চুনু মিয়া। প্রশাসনের এ অভিযানের খবর পেয়ে বর ও কাজী মধ্যপথ থেকে সটকে পড়ে। তবে আমন্ত্রিত অতিথি ও কিছু বরযাত্রী উপস্থিত হলে বর-কনে ও বিয়ে ছাড়াই তারা ভুরিভোজ করেন।

স্কুল সুত্রে জানা গেছে, বড়লেখা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ‘খ’ শাখার ছাত্রী শাহনাজ আক্তার রুমী । তাহার শ্রেণী রোল-৩০। স্কুলের ভর্তি রেকর্ড অনুযায়ী জন্মের তারিখ ২৭ র্ফ্রুেয়ারী ২০০৫ ইং। সে হিসেবে তাহার বয়স ১৩ বছর। গত ১১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় তার সিট বসানো হলেও সে পরীক্ষা দিতে আসেনি। ।

সহকারী কমিশনার (ভুমি) সমীর বিশ্বাস জানান, বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে ভ্রাম্যমান আদালত চালাতে গেলে কনেকে নিয়ে বাবা সটকে পড়েন। এছাড়া বর ও কাজী বিয়ের আসরে আর উপস্থিত হয়নি। পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, স্কুল কর্তৃপক্ষ ও সংবাদ কর্মীদের সার্বিক সহযোগিতায় নিশ্চিত এ বাল্যবিয়েটি পন্ড হয়েছে।

(এলএস/এসপি/জুলাই ১৫, ২০১৭)