রাজন্য রুহানি, জামালপুর : কমতে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। এখনও পানিতে তলিয়ে আছে জেলার ৪৫টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত ২৪ ঘন্টায় ২০ সেন্টিমিটার পানি কমলেও বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পানি ও তাপদাহে দুর্গতদের পানিবাহিত নানা রোগের প্রকোপ দেখা দিলেও সিংহভাগ এলাকায় মেডিকেল টিম পৌঁছেনি। ঘরবাড়ি, স্কুল-কলেজ, সড়ক-বাজার ও ফসলি মাঠ পানিতে থাকায় দেখা দিয়েছে চরম খাদ্যসংকট।

ত্রাণের জন্য হাহাকার চলছে বানভাসীদের। দরিদ্র ছাড়াও পানিবন্দি সম্পদশালী মানুষজনেরও একবেলা আধপেট খেয়ে অনেকেরই দিন কাটছে অনাহারে। ঘরে টাকা থাকলেও পানিতে নিমজ্জিত বাজার। দূরদুরান্ত থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে আনলেও রান্না করার উচুঁ স্থানটুকুও অবশিষ্ট নেই। ঘর থেকে বের হতে না পারা বানভাসী মানুষেরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। শুধু ভাঙা রাস্তাঘাটেই নয়, সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে ঘওে বন্যাদুর্গতরা।

মানুষের চেয়েও দুভোর্গে পড়েছে পানিবন্দি থাকা গরুসহ গৃহপালিত পশু। গো-খাদ্যের চরম সংকটের মুখে কাহিল হয়ে পড়েছে পানিবন্দি গৃহপালিত পশুগুলো। বানভাসী মানুষের জন্য যৎসামান্য ত্রাণ সহায়তা দেয়া হলেও চরাঞ্চলের কৃষকদের অবলম্বন গবাদি পশুর খাবারের জন্য জেলা প্রশাসন বা প্রাণী সম্পদ বিভাগ এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা দেয়নি বলে অভিযোগ বানভাসীদের। গো-খাদ্য যোগান নিয়ে বিপাকে থাকা কৃষকের মধ্যে দেখা দিয়ে গরু ডাকাতি আতংক। যমুনাপাড়ের দুর্গত এলাকাজুড়ে গরু ডাকাতি আতংক কৃষকের ঘুম হারাম করে ফেলেছে। উপার্জনের শেষ সম্বলটুকু রক্ষায় পালাক্রমে রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছে দুর্গত এলাকাগুলোতে। গৃহপালিত পশু নিয়ে র্দুভাবনায় পড়েছে বানভাসীরা। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘাঁ।

দীর্ঘস্থায়ী পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌছলেও কর্তাব্যক্তিদের ঘুম ভাঙছে না। সরকারি বরাদ্ধ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল এবং ত্রাণ বিতরনেও স্বজনপ্রীতি অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে পানিবন্দিরা। ত্রাণ ও গো-খাদ্যের সংকট সমাধান এবং রোগবালাই থেকে পরিত্রাণের জন্য আক্রান্তরা দ্রুত স্বাস্থ্যসেবার দাবি জানিয়েছে।

(আরআর/এসপি/জুলাই ১৬, ২০১৭)