জামালপুরে যমুনার পানি কমলেও বাড়ছে বহ্মপুত্রের পানি
রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুরে যমুনার পানি কমলেও বাড়ছে বহ্মপুত্রের পানি। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি ২৯ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমলেও ঘরবাড়ি থেকে এখনো পানি নামে নি। সব মিলিয়ে পানিবন্দি মানুষের ভোগান্তি আছেই। যমুনা-ব্রহ্মপুত্র বেষ্টিত জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বন্যা কবলিত এলাকায় এখন বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির পথে। অপরদিকে জামালপুর জেলা শহরঘেঁষা ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়তে থাকায় নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে নাওভাঙা অঞ্চল। এ অঞ্চলের মানুষেরা শহররক্ষা বাঁধ ও অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে।
ইসলামপুরের বন্যাদুর্গত মানুষের মাঝে খাদ্য, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। ১৫ দিন ধরে পানিবন্দি থাকায় ইসলামপুরের ৭টি ইউনিয়নের বানভাসীদের শরীরে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ। বন্যা কবলিত দুর্গম এলাকাগুলোতে বিভিন্ন বাঁধ ও ব্রিজের উপর আশ্রয় নেয়া মানুষেরা প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে, অনেকেই ত্রাণের ছিটেফোটাও পায় নি বলে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরাধিকার ৭১ ও বাংলা ৭১ কে জেলা প্রশাসক আহমেদ কবির জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাদুর্গত এলাকায় নিয়মিত ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
পানি কমতে থাকায় বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে ডাকাত আতঙ্ক। এসব এলাকায় গরুচুরির প্রবণতা দেখা দেওয়ায় গৃহস্থরা রাত জেগে পালাক্রমে পাহারা দিচ্ছে। চুরির কবলে পড়ে শেষ সম্বল গৃহপালিত পশুপাখি হারিয়ে জীবন যাপনে চরম বিপাকে পড়েছে অনেকেই। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে দিনমজুর ও নিন্মআয়ের মানুষেরা। কাজ না থাকায় তারা সরকারি বেসরকারি সাহায্যের আশায় প্রহর গুনছে দিনের পর দিন।
অপরদিকে, শহরের পাথালিয়া এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের মধ্যে দীর্ঘদিন আগে বাঁধ দিয়ে নদের গতিপ্রবাহ বন্ধ করায় ভাঙতে ভাঙতে নাওভাঙা চর এখন প্রায় বিলীনের পথে। জামালপুর পৌরসভার কয়েক শ গজ উত্তরে নাওভাঙা চরে ২০ বছর আগে থেকেই শুরু হয় বসতি। শহরের সাথে যোগাযোগ রক্ষার্থে ফৌজদারি মোড় থেকে নাওভাঙা গ্রাম পর্যন্ত ব্রিজ তৈরি হয় ব্রিজ। স্থানীয়দের উদ্যোগেও তৈরি হয় আরো ৩ টি সাঁকো। ব্রিজটির অপর প্রান্তের অঞ্চল গত বছরের বন্যায় বিলীন হয়ে যাওয়ায় ব্রিজটি যেন এখন ব্রহ্মপুত্রের নদের মাঝখানে ‘তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে’ থাকার মতো অসহায়।
(আরআর/এএস/জুলাই ১৭, ২০১৭)