শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানার সখিপুর ছৈয়ালকান্দি গ্রাম থেকে নিখোঁজের ৮ দিন পর লিজা (১১) নামে তৃতীয় শ্রেনির এক শিক্ষার্থীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লিজা সখিপুর সরদারকান্দি গ্রামের লেহাজ উদ্দিন শেখের মেয়ে এবং সখিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শেনির শিক্ষার্থী ছিল।

লিজার পরিবার ও সখিপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ জুলাই শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে লিজা বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর সখিপুর স্কুল মাঠে রব মিয়ার গ্যারেজ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য ১০ টাকা দিয়ে একটা সাইকেল ভাড়া করে। প্রায় ২০ মিনিট পরে আবার লিজা রব মিয়াকে সাইকেল ফেরৎ দেয়। কিন্ত এরপর বাড়িতে আর না ফিরে যাওয়ায় বেলা ৩ টা দিকে পরিবারের লোকেরা খোঁজখুঁজি শুরু করে লিজাকে। দিন রাত খুঁজেও কোথাও না পেয়ে ১৬ জুলাই রবিবার লিজার চাচি নাসরিন বেগম সখিপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। কিন্তু পুলিশ লিজাকে উদ্ধারে কোন চেষ্টা করেনি বলে জানান পরিবারের লোকেরা।

৮ দিন পর ২২ জুলাই শনিবার লিজাদের বাড়ি থেকে ১ কিমি দুরে সখিপুর ছৈয়াল কান্দি গ্রামে মহিলারা শাক তুলতে গেলে সেখানে দূর্গন্ধ অনুভব করেন। কিছুদুর এগিয়ে তারা একটি ধান ক্ষেতের ভেতর হাটু পািনতে লিজার লাশ ভাসতে দেখে প্রথমে লিজার পরিবার ও পরে সখিপুর থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে শনিবার বিকেলে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে এনে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করেন।

সখিপুর বাজারের সাইকেল গ্যারেজ মালিক রব মিয়া বলেন, গত শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে পৌনে ১০ টার দিকে লিজা ১০ টাকার বিনিময়ে ১৫ মিনিটের জন্য আমার কাছ থেকে একটি সাইকেল ভাড়া নেয়। প্রায় ২০ মিনিট পরে লিজা আবার সাইকেলটি ফেরৎ দিয়ে চলে যায়। এরপ কি হয়েছে আমি জানিনা। তবে লিজার সাইকেল চালানোর খুব সখ ছিল এবং আমার থেকে মাঝে মধ্যে ভাড়ায় সাইকেল চালাতো।

লিজার চাচা চুন্নু শেখ বলেন, আমার ভাই একজন দরিদ্র কৃষক। তার চারজন সন্তান। এর মধ্যে লিজা বড়। লিজার আরো একটি ছোট বোন ও দুইজন ভাই রয়েছে। লিজা তৃতীয় শ্রেনিতে পড়তো। খেলা পড়ায় খুব আগ্রহ ছিল। ওকে কে বা কারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে জানিনা। আমাদের দাবি হত্যাকারিদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক।

সখিপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ একেএম মঞ্জুরুরুল হক আকন্দ বলেন, সংবাদ পেয়ে সখিপুর থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার পরের দিনই তার চাচি থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেছিল। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(কেএনআই/এএস/জুলাই ২২, ২০১৭)