স্টাফ রিপোর্টার : বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধির অর্জন ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে লক্ষ্যে আগামীকাল বুধবার (২৬ জুলাই) নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বেলা সাড়ে ১১টায় চলতি অর্থবছরের (২০১৭-১৮) প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন।

ব্যাংকটির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, গত অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় এবারও মুদ্রানীতিতে সতর্ক অবস্থা থাকবে। তবে ঋণপ্রবাহ কিছুটা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কৃষি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতে ঋণ বিতরণ বাড়ানোর ওপর জোর দেয়া হবে।

এ ছাড়া জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকারি খাতে ঋণ নেয়ার প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়। তবে এ জন্য বেসরকারি খাত যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সে দিকে খেয়াল রাখা হবে। বেসরকারি খাতে এবারে ঋণ প্রবৃদ্ধি সামান্য বাড়িয়ে ১৭ শতাংশ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি জাতীয় বাজেটে ঘোষিত ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন ও ৫ দশমিক ৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতি সীমিত রাখার লক্ষ্যে ঘোষিত হয়। সরকার ঘোষিত লক্ষ্য দুটি অর্জনের পথ ঠিক থাকলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্য কর্মসূচিগুলো ঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। অভ্যন্তরীণ ঋণ বিতরণ ও বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। সরকারকে দেয়ার জন্য ঋণের যে জোগান রাখা হয় সরকার তা গ্রহণ করেনি, উল্টো ১৮ হাজার ২৯ কোটি টাকা বেশি পরিশোধ করেছে।

আগের মুদ্রানীতিতে গত জুন নাগাদ মুদ্রা সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। অথচ মে পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ১১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। বেসরকারি খাতে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ ঋণ বৃদ্ধির প্রাক্কলনের বিপরীতে মে পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ১৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।

সরকারের নির্ধারিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকে সামনে রেখে মুদ্রানীতিতে বিভিন্ন প্রাক্কলন করা হয়। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৪ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হয়েছে।

এদিকে, গত অর্থবছরের বাজেটে ৭ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হলেও চূড়ান্ত হিসাবে তা ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ হবে বলে আশা করছে সরকার। তবে মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়ে গত জুনে ৫ দশমিক ৯২ শতাংশে ওঠেছে। বিশেষ করে চালের দাম বাড়ার কারণে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেশি বেড়েছে।

প্রসঙ্গত, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি বছর দুইবার মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে। ছয় মাস অন্তর এই মুদ্রানীতি একটি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই মাসে এবং অন্যটি জানুয়ারি মাসে। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে পরবর্তী ছয় মাসে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৫, ২০১৭)