নিউজ ডেস্ক : আমরা সাধারণত সবাই জানি চিড়িয়াখানায় থাকে বিরল প্রজাতির প্রাণী। পাকিস্তানের বাণিজ্যিক রাজধানী করাচির চিড়িয়াখানায় বাঘ, সিংহ, হরিণ, হাতি- অনেক কিছুই আছে।

তবে সেখানকার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো মমতাজ বেগম। অর্ধেক মানুষ, অর্ধেক শেয়াল।

বছরের পর বছর ধরে তিনি দর্শকদের ভাগ্য গণনা করে আর কৌতুক বলে আনন্দ দিয়ে যাচ্ছেন। করাচি চিড়িয়াখানার বিশেষ ধরনের একটি বিছানা তার ঠিকানা। চেহারা দেখেই তাদের ভূত-ভবিষ্যত বলে দিতে পারেন! ছাত্ররা আসে তাদের পরীক্ষার ফল জানতে, মায়েরা আসেন তাদের অবিবাহিত মেয়েদের সম্ভাব্য স্বামীর খোঁজে।

এজন্য দর্শকদের দিতে হয় মাত্র ১০ রুপি। তবে তিনি সত্যিকারের অর্ধেক মানবী, অর্ধেক শেয়াল নয়। তিনি হলেন ৩৩ বছরের মুরাদ আলী। দুই সন্তানের এই জনক দিনের বেলাটা বিশেষ পোশাক পরে চিড়িয়াখানায় কাটান। চিড়িয়াখানায় তার নাম মমতাজ বেগম। সাথে থাকে কয়েকজন সহকারী।

এ দিয়েই তাদের সংসার চলে যায়। বিভিন্ন চিড়িয়াখানা নতুন নতুন প্রাণি এনে দর্শক আকৃষ্ট করার কাজ করে। কিন্তু করাচি চিড়িয়াখানার এই উদ্যোগটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রায় ৪০ বছর আগে ‘শেয়াল-মানবী’র ভূমিকায় নেমেছিলেন মুরাদ আলীর বাবা।

১৬ বছর আগে তিনি মারা যাওয়ার পর মুরাদ তার স্থলাভিষিক্ত হন। রয়টার্সকে মুরাদ বলেন, ‘মানুষ এখানে আসে কষ্ট নিয়ে, ফিরে যায় আশা নিয়ে। তাদের সুখ আমাকেও সুখী করে।’ তিনি কয়েকটি স্থানীয় ভাষা জানেন। জানেন কথা বলে মানুষকে মুগ্ধ করতে।

তার বুদ্ধিমত্তাতেও মানুষ মুগ্ধ হয়। মমতাজের সাথে দেখা করার পর সিক্সথ গ্রেডের ছাত্র মোহাম্মদ ওসামা জানান, ‘আমার খুবই ভালো লাগছে। তার সাথে কথা বলে আনন্দ পাই। আমি খুবই খুশি।’ এমন অনেকে আছেন, তার সেই ছোট কাল থেকে মমতাজ বেগমের সাক্ষাৎ পেয়ে আসছেন।

মমতাজ তথা মুরাদ আগে সার্কাসে কাজ করতেন। ফলে মানুষকে পটানোর কিছু বিদ্যা সেখানেই অর্জন করেছিলেন। এখন সেটাই কাজে লাগাচ্ছেন।




(ওএস/এটিআর/জুন ২৬, ২০১৪)