গোলাম কবির বিলু, পীরগঞ্জ (রংপুর) : এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েও ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ভেস্তে যেতে বসেছে সৈয়দা আশরেফা ইসলামের। সে ঢাকার ফার্মগেটে ‘উন্মেষ’ কোচিংয়ে মেডিকেল ভর্তির কোচিং করে তার ব্যাচের মধ্যে সেরা অবস্থানে থাকলেও তার মধ্যে হতাশা কাজ করছে।

কারণ গত ২৩ জুলাই দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এইচএসসি’র ফলাফল প্রকাশ হলেও লালমনিরহাটের মজিদা খাতুন সরকারী মহিলা কলেজের ছাত্রী আশরেফাসহ ১৫ ছাত্রীর ফলাফল স্থগিত হয়ে আছে। যাদের অধিকাংশই এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া ছিল। ফলাফল না পেয়ে ওই শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারছে না বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের অধীনে লালমনিরহাটের মজিদা খাতুন সরকারী মহিলা কলেজ থেকে মোট ৪’শ ৮৩ জন ছাত্রী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩’শ ৯৫ ছাত্রী কৃতকার্য হয়েছে। গত ২৩ জুলাই প্রকাশিত এইচএসসির ফলাফলে লালমনিরহাটের ওই কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ১৩০ জনের মধ্যে ১০৫ জন কৃতকার্য এবং ১৫ ছাত্রীর ফলাফল স্থগিত হয়। ফলাফল স্থগিত হওয়ায় ছাত্রীদের অভিভাবকরা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টির ব্যাপারে জানতে চাইলে সঠিক কোন কারণ বলতে পারেনি।

এ ব্যাপারে কলেজটির উপাধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, লালমনিরহাট-২ কেন্দ্রে আমরা এইচএসসি পরীক্ষা নিয়েছি। আমাদের বিজ্ঞান বিভাগের ১৫ ছাত্রীর ফলাফল স্থগিতের ব্যাপারে বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করলে তারা প্রকৃত কারন বলেনি। এ নিয়ে আমরা টেনশনে আছি।

ওই ছাত্রীদের এক অভিভাবক ব্যাংক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, আমার বোন এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার মতো এসএসসিতে আরও ৮/১০ জন জিপিএ-৫ পাওয়া ছাত্রীর ফলাফল স্থগিত হয়েছে। ফলে সে (বোন) ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিতে পারছে না।

হতাশার প্রভাব পড়া ছাত্রী আশরেফা বলেন, এসএসসিতে ভাল ফলাফল করে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু এইচএসসির ফলাফল স্থগিত হওয়ায় আমার সে স্বপ্ন ধুলিৎসাৎ হতে বসেছে। আমরা কয়েকজন বান্ধবী লালমনিরহাট থেকে ঢাকায় এসে মেডিকেলে ভর্তির কোচিং করছি। এখন খেতেও পারছি না, পড়তেও পারছি না। শুনছি, আগামী সপ্তাহে মেডিকেল ভর্তির ফরম ছাড়া হবে। আবেদন করতে পারবো কিনা জানিনা।

বোর্ডের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রাকিবুল হাসান বলেন, স্থগিত ফলাফলের ব্যাপারে পরীক্ষাথীরা আবেদন করলে ফলাফল প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে তাদের সংশোধিত ফলাফল দেয়া হয়। এবারে আমাদের বোর্ডের অধীনে ৪৫ জনের ফলাফল স্থগিত রয়েছে। এরমধ্যে লালমনিরহাটের ওই কলেজের ১৫ জন, গাইবান্ধার (কেন্দ্র নং- ৭৮২) সুন্দরগঞ্জ মহিলা কলেজের ১২ জন এবং অন্যান্য কলেজের শিক্ষার্থী রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই স্থগিত ফলাফল প্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করেছে। আগামী ১০ আগষ্ট পর্যন্ত ওই আবেদন নেয়া হবে এবং ২২ আগষ্টের মধ্যে ফলাফল প্রদান করা হবে। তবে তিনি ফলাফল স্থগিতের কারণ বলতে পারেননি।

উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ এর মাতা মজিদা খাতুন এর নামে লালমনিরহাটে বালিকা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৯৭ সালে কলেজটি আত্মীকরণ হয়েছে।

(জিকেবি/এসপি/জুলাই ৩০, ২০১৭)