বগুড়া প্রতিনিধি : বাড়ি থেকে ক্যাডার দিয়ে তুলে নিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণের পর সালিশের নামে মা-মেয়েকে মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার ঘটনায় শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক তুফান সরকারকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বগুড়া জেলা শ্রমিক লীগ।

রবিবার জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দিন শেখ হেলাল এক যুক্ত বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেন।

এদিকে ধর্ষণের পর সালিশের নামে মা-মেয়েকে মাথা ন্যাড়ার ঘটনায় শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকারসহ গ্রেফতার তিনজনকে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রবিবার দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার ওসি (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ তাদের আদালতে নিয়ে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

শ্রমিক লীগের বিবৃতিতে নেতারা জানান, অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়কের পদ থেকে তুফান সরকারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে অন্য কেউ করলে তাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তারা।

এদিকে ধর্ষণের পর সালিশের নামে মা-মেয়েকে মাথা ন্যাড়ার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক।

রবিবার জেলা প্রশাসক নূরে আলম সিদ্দিকী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা-মেয়েকে দেখতে যান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনি মেয়েটিকে চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দেন।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার বিকেলে কলেজে ভর্তি-ইচ্ছুক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক তুফান সরকার।

বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তিনি ও তার সহযোগীরা দলীয় ক্যাডার ও এক নারী কাউন্সিলরকে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পেছনে লেলিয়ে দেন। চার ঘণ্টা ধরে তারা ছাত্রী ও তার মায়ের ওপর নির্যাতন চালান। এরপর দুজনেরই মাথা ন্যাড়া করে দেন।

এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকার, তার স্ত্রী আশা সরকার, আশা সরকারের বড় বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মার্জিয়া আক্তারসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে দুটি মামলা করেন।

তবে এ ঘটনায় এখনও ধরা পড়েনি নির্যাতনকারী নারী কাউন্সিলর ও অন্যরা। ধর্ষণের শিকার মেয়েটি এখন অসুস্থ। চিকিৎসক জানিয়েছেন, সে শঙ্কামুক্ত।

(ওএস/এসপি/জুলাই ৩০, ২০১৭)