স্টাফ রিপোর্টার : নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, পানির লড়াই আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে দিয়ে হবে না। পানি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা নির্দিষ্ট করণীয় নির্ধারনের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে উজানে পানি প্রত্যাহার এবং বাংলাদেশের বিপর্যয়রোধে সার্বিক ঐক্যমত্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি ও আন্তর্জাতিক পরিবেশ ও পানি অধিকার পর্যবেক্ষণ গ্রুপ এই বৈঠকের আয়োজন করে।

মান্না আরও বলেন, ভারতের নির্বাচনের পর মোদির কাছে যেতে দেশের বড় দুই দলে প্রতিযোগিতা চলছে। ভারতকে তুষ্ট করতেই ব্যস্ত তারা।

ভারতের সাথে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনে লং মার্চের বিকল্প নেই জানিয়ে তিনি বলেন, সবাইকে নিয়ে লং মার্চ করতে হবে। এতে খালেদা জিয়া ড. কামালের মত লোকেরা গাড়িতে করে গেলেও সমস্যা নেই। কারণ হেঁটে গেলে তারা অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। তবু তারা সাথে থাকুক। এর ফলে আন্দোলন সফল হতে পারে।

বেসরকারি বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। রাজনৈতিক মতভেদ সামনে আসলে জাতীয় ঐক্য বাধাগ্রস্ত হয়। তাই সবাইকে দেশের স্বার্থে সমস্যা সমাধানে একত্রিত হতে হবে।

পানি সমস্যা সমাধানে জনগণকে সোচ্চার হতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, দল-মত নির্বিশেষে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে অধিকার আদায় করতে হবে।

প্রতিবেশী বন্ধু দেশ ভারত এই ব্যাপারে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, যে কোনো নদী তার চলার পথে একাধিক দেশকে সংযুক্ত করে। আর ওই নদীর ভাগ সমানভাবেই সংযুক্ত দেশগুলো ভোগ করে। কিন্তু শুধু বাংলাদেশ আর ভারতের ক্ষেত্রে তা ভিন্ন। ভারত একতরফাভাবে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর সুবিধা ভোগ করছে।

তিনি বলেন, ৫৪টি অভিন্ন নদীর সুষ্ঠু বণ্টনের জন্য বিশ্বব্যাপী বহুমুখি আলোচনা করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারকেই ভূমিকা নিতে হবে।

১৯৯৭ সালের আন্তর্জাতিক নদী কনভেনশনে বাংলাদেশ কেন সই করছে না এমন প্রশ্ন রেখে সিপিবি সভাপতি বলেন, মাত্র একটি দেশ সই করলেই এই চুক্তি বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু বাংলাদেশ কেন সই করছে না তা বোধগম্য নয়।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালিকুজ্জামান বলেন, জাতীয় ও রাজনৈতিক ঐক্য ছাড়া ভারতের সাথে বাংলাদেশের পানিবিরোধ সমাধান করা যাবে না। পানি বিষয়ে ভারতের সাথে আলোচনা করার আগে দেশের বুদ্ধিজীবীদের সাথে আলোচনা করে সমাধানের পথ খুঁজে বের করা দরকার।

বুয়েটের পানিসম্পদ প্রকৌশল বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সাব্বির মোস্তফা খান বলেন, পাকিস্তান ও নেপালের সাথে ভারতের যে পানি চুক্তি হয়েছে তাতে দেশগুলোর স্বার্থ সংরক্ষিত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের সাথে ভারতের চুক্তিতে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ রক্ষা হয়নি।

সংগঠনের নিউইয়র্ক চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সালুর সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমেদ, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কলামিস্ট সাদেক খান, বাপা সম্পাদক ডা. আব্দুল মতিন প্রমুখ।

‘পানির লড়াই আ.লীগ-বিএনপিকে দিয়ে হবে না’