মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া : পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আন্ধারমানিক নদীর বালিয়াতলী খেয়াঘাট। এখানে যেন যাত্রী পারাপারের নামে চলছে চাঁদাবাজী। সরকার নির্ধারিত ভাড়া ৪ টাকা। সন্ধা পর্যন্ত ৪ টাকার  বদলে জনপ্রতি আদায় হচ্ছে ১০ টাকা। হাতে মুরগী, কিংবা ছোট বাজারের ব্যাগ যাই থাকুক তার জন্যও দিতে হচ্ছে  অতিরিক্ত ভাড়া। এভাবে চলছে প্রকাশ্যে।  যেন দেখার কেউ নেই। আর রাত হলেই চেহারা, পোষাক দেখে ইচ্ছে মতো আদায় হচ্ছে  ভাড়া। এছাড়া যাত্রীবাহী মোটরসাইকেল পারাপারে ১০ টাকার পরিবর্তে নেয়া হচ্ছে ২০-৫০ টাকা। এমনিভাবে  যাত্রীদের কাছ থেকে চাঁদার মতো অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা না দিলে যাত্রীদের লাঞ্ছিত করা হয়।  


২০১৬ সালের ৯ মে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্ধারিত টোলরেট অনুসারে খেয়া পারাপারে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় যাত্রী প্রতি ভাড়া চার টাকা। বৈঠচালিত নৌকায় দুই টাকা। মোটর সাইকেল ১০ টাকা। বাই সাইকেল চার টাকা। ছাগল/ভেড়া চার টাকা। গরু/মহিষ ১০ টাকা। বিভিন্ন মালামাল ৪০ কেজি পর্যন্ত তিন টাকা এবং রিক্সা-ভ্যান ছয় টাকার টোল চার্ট করা হয়।

সরেজমিনে বালিয়াতলী খেয়াঘাটে গিয়ে দেখা যায়, কান টোর চার্ট টানানো নেই। ফেরির গায়ে লেখা টোল চার্টে কাদা মেখে রাখা হয়েছে যাতে কেউ ভাড়া কতো তা না জানতে পারে। শুধু তাই না খেয়ার ভাড়া আদায়কারী সেই চার্টের উপর সরকারদলীয় এক নেতার শুভেচ্ছা সংবলিত বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে।

কলাপাড়ায় মোট ২১টি খেয়াঘাট ইজারা দেয় উপজেলা প্রশাসন। আর দু’টি ইজারা দেয় কলাপাড়া পৌরপ্রশাসন। এসব খেয়াঘাটের আদায়কারীর বিরুদ্ধে বখাটেপনার এন্তার অভিযোগ রয়েছে। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েকজন নারী অভিভাবক এসব খেয়াঘাটে ছাত্রীদের যাওয়া-আসার কালে বখাটেপনার অভিযোগ করেন প্রকাশ্যে।

বিশেষ করে বালিয়াতলী, লোন্দা, পৌরশহরের কলাপট্টি, ফেরিঘাট, তেগাছিয়া, মহিপুর-আলীপুর, হাজিপুর, ফুলবুনিয়া, আনিপাড়া, চিঙ্গুরিয়াসহ সক ক’টি খেয়াঘাটের চিত্র এক। বিষয়টি বিভিন্ন সময় উপজেলা আইনশৃঙ্খলার সভায় উত্থাপিত হয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ হয়নি। যাত্রী, অভিভাবকদের প্রশ্ন খেয়ার নৌকার ভাড়া আদায়কারীরা এতো ক্ষমতা পায় কোথা থেকে যেখানে প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষিত হচ্ছে?

এ ব্যাপারে বালিয়াতলী খেয়া ঘাটের ভাড়া আদায়কারী মুসা গাজী জানান, তারা বেশি টাকায় ইজারা নিয়েছেন। তাই চার টাকান পরিবর্তে ১০ টাকা নিচ্ছেন। এর কম নিলে তাদের লস হবে। তবে কারো কাছ থেকে জোড় করে ভাড়া আদায় করছেন না।

(এমকেআর/এএস/আগস্ট ০৮, ২০১৭)