রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল থেকে শিবির সন্দেহে ১৩ শিক্ষার্থীকে আটক করে ব্যাপক মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত হলের বিভিন্ন কক্ষে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন জিহাদি বই, শিবিরের নথি, দুটি কম্পিউটারসহ নগদ ১৯ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মাহবুব হোসেনের ভাষ্য, ‘অভিযান চালানোর সময় আমরা হলে উপস্থিত ছিলাম কিন্তু হল প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় আমরা অভিযানে অংশ নেইনি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ১৩ জন শিবিরে নেতাকর্মীকে আটক করে আমাদের হাতে সোপর্দ করেছেন।’

তিনি বলেন, অধিকাংশই শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। তাদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আমরা তাদেরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি। দ্রুত তদন্ত করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আটকরা হলেন, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুল হাসান নাফিস, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম, আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব আহমেদ, বোটানি চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান, পরিসংখ্যান চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শরীফুল ইসলাম, জোহা হল শাখা শিবিরের সেক্রেটারি ও ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকির হোসেন, পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাহানুর আলম হিমেল, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাহেব রানা, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রাকিব, আরবি সাহিত্য বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাবিউল ইসলাম, অলিউল ইসলাম, আবু জাফর ও দ্বিতীয় বর্ষের গোলাম রাব্বানী। এদের মধ্যে আবু জাফরকে আজ বুধবার সকাল ৬টায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল থেকে আটক করা হয়।

হল সূত্রে জানা যায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু রাত ১২টার দিকে হলের ১৪৩ নম্বর কক্ষে সাহেব রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তার কাছে শিবিরের বিভিন্ন তথ্য, ডকুমেন্ট ও ক্রেস্ট পাওয়ার পর তার দেওয়া তথ্য অনুসারে হলের ১৪৮, ১৫৫, ১৫০, ২৪৯, ২৫৪, ২৭৬, ৩৫৮, ৩৬০ ও ৩৬২ নম্বর কক্ষে অভিযান চালায়।

এসময় তাদের কাছে থেকে বিভিন্ন জিহাদি বই ও শিবিরের রিপোর্ট বই, ডায়েরি, অর্থ বিভাগের ১৯ হাজার টাকা ও শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতকর্মীর তালিকাসহ বিভিন্ন ডকুমেন্ট পাওয়া যায়।

অভিযানের সময় তাদের বেধড়ক মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে ভোর ৪টার সময় মতিহার থানা পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়। এ সময় সমস্ত ডকুমেন্ট পুলিশ জব্দ করে নিয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, গোয়েন্দা ও প্রশাসনে কাছ থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা সোহরাওয়ার্দী হলের সাহেব রানা ও নাবিউলকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদে তারা শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা হলের বেশ কয়েকটি কক্ষে অভিযান চালিয়ে ১৩ জন শিবির নেতাকর্মীকে আটক করি।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ০৯, ২০১৭)