গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহে গৌরীপুর উপজেলার ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গত ৭দিনে ডাকপ্লেগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে সাড়ে ৩হাজার হাঁস। প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে ৩মাস ধরে নেই হাঁসের ডাকপ্লেগ ভাইরাসের ভ্যাকসিন।

মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের বেকারকান্দা গ্রামের লিটন মিয়ার খামারে প্রায় এক হাজার হাঁস মারা যায়। বুধবারও এ মৃত্যু ঠেকানো যায়নি। জীবিত হাঁসগুলো খিচুনী দিয়েই মারা যাচ্ছে। খামারীরা জানান, ডাকপ্লেগ রোগে দিশেহারা খামারী লিটন মিয়া ভ্যাকসিনের জন্য উপজেলা প্রাণীসম্পদ হাসপাতালে গিয়েও শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। দুইমাস পূর্বে ভ্যাকসিন ছিলো বলে স্বীকার করেন ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের ভেটেরিনারী ফিল্ড এসিসটেন্ট মোঃ সায়েদুর রহমান। খামারী লিটন মিয়ার অভিযোগ, বিভিন্ন কোম্পানীর ওষুধ প্রয়োগের পরেও হাঁস মারা যাচ্ছে।

উপজেলায় হাঁস পালনের জন্য প্রায় দেড়শ খামার রয়েছে। এরমধ্যে ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের আরও ১৭টি খামারে হাঁসের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব খামারীদের অভিযোগ, ডাকপ্লেগ ঠেকাতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আবু সাঈদ সরকার। গত ৭দিনে ডাকপ্লেগ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শাহবাজপুরের আব্দুল লতিফের পুত্র বাদল মিয়ার ৪০০টি হাঁস, লামাপাড়ার আবুল হাসিমের ৬৮০টি হাঁস, পাছারকান্দার এনায়েত কবীর ৮৫০টি ও শাহবাজপুরের শফিকুল ইসলাম ৫৭০টি হাঁস মারা গেছে। বেকারকান্দা গ্রামের নুর হোসেনের পুত্র লিটন মিয়া জানান, তিনি হাঁস বাঁচাতে বারবার প্রাণীসম্পদ হাসপাতালে গিয়েছেন, অফিসার পাত্তা দেয়নি।
৩মাস যাবত ডাকপ্লেগ রোগ প্রতিরোধের ভ্যাকসিন নেই স্বীকার করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আবু সাঈদ সরকার।

তিনি জানান, হাঁসের মৃত্যুর খবর পেয়েছি, সেখানে অফিসের লোকজনকে পাঠানো হয়েছে। মৃত হাঁসের ময়নাতদন্ত চলছে। এখানো মৃত্যুর কারণ বা রোগ নির্ণয় হয়নি। ক্ষতিগ্রস্থ খামার দেখতে এ কর্মকর্তা না যাওয়ায় ক্ষুব্দ খামারী জয়নাল আবেদিন জানান, হাঁস মরছে, আমরা মারা গেলেও এ কর্মকর্তা খামারে আসেন না। সাঈদ সরকারও স্বীকার করেন তিনি যেতে পারেননি।

অপরদিকে গরু মোটাতাজাকরণ ও দুগ্ধখামারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন আবারও ক্ষুরারোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা। ইতোমধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে সহনাটী ইউনিয়ন, বোকাইনগর ও মাওহা ইউনিয়নে দেড়শ গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আবু সাঈদ সরকার বলেন, ক্ষুরারোগের ভ্যাকসিনের সংকট নেই।

প্রাণীসম্পদ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৩মাস পূর্বে গবাদিপশুর সুরক্ষায় কয়েক লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সুরক্ষা সেড এই বর্ষায় গবাদি পশুর সুরক্ষা দিতে পারেনি। সেড নির্মিত হলেও মাটি ভরাট ছাড়াই অসমাপ্ত রেখে ঠিকাদার চলে গেছেন। বৃষ্টিতে ভিজে নর্দমায় দাঁড় করিয়ে চলছে গবাদিপশুর চিকিৎসা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মর্জিনা আক্তার বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাঁস মারা জেনেছি। প্রতিকারের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এসআইএম/এএস/আগস্ট ০৯, ২০১৭)