শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ইশ্বরকাঠি এলাকায় পদ্মা নদীতে পীরের দরবারের আশেকানাদের বহনকারী একটি ট্রলার ডুবে জাজিরা উপজেলার উত্তর ডুবুলদিয়া গ্রামের শিশু সহ তিন জন নিখোঁজ হয়েছেন। ট্রলারটিও পানির প্রবল স্রোতের তোড়ে কোথায় ভেসে গেছে তার হদিস মিলেনি। নিখোঁজের সন্ধানে ফায়ার  সার্ভিস, পুলিশ ও এলাকাবাসী পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় ও নিখোঁজদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে জাজিরা উপজেলার উত্তর ডুবুলদিয়া আকনকান্দি গ্রামের কিছু লোক তাদের কথিত পীর নড়িয়ার মুলৎগঞ্জ মজিদ শাহ্ এর মাজারে ওরশে অংশ গ্রহন করেন। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টায় নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর এলাকার পদ্মা নদীর ঘাট থেকে ১৬ ভক্ত নারী পুরুষ একটি ট্রলার ভাড়া করে। ট্রলারটি দেড় ঘন্টা চলার পর নড়িয়া উপজেলার মোক্তারেরচর ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গন কবলিত এলকা ঈশ্বরকাঠি এসে জ্বালানী শেষ হয়ে যায়। এরপর সেখানে ট্রলারটি থামিয়ে সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে চালক ডিজেল কিনতে উপরে উঠেন। এরি মধ্যে ফাটলধরা মাটির বেশ কিছু অংশ পদ্মা তীরে ভেড়ানো ট্রলারের উপর ধ্বসে পরে। মুহুর্তেই ট্রলারটি প্রচন্ডস্রোতেতে নদী তলিয়ে যায়।

তাৎক্ষনিকভাবে ১৩ যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও উত্তর ডুবুলদিয়া গ্রামের দেলোয়ার হাওলাদারের ৩ বছরের শিশু কন্যা আয়েশা, ইব্রাহিম খালাসীর ১৪ বছরের ৯ম শ্রেনী পড়ুয়া ছেলে রোমান ও জায়েদ আলী আকনের স্ত্রী শিরিয়া বেগম(৬০) নিঁেখাজ হন। এ সংবাদ চারদিকে ছরিয়ে পরলে নিখোঁজদের স্বজনরা ঘটনাস্থলে এসে ভীড় করতে থাকেন এবং তাদের আহাজারিতে এলাকার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে।

ট্রলারের যাত্রী ডুবুলদিয়া গ্রামের আব্দুস সোবহান বলেন, আমরা মজিদ শাহ্ পীরের দরবার থেকে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে ভোর ৬ টায় কেদারপুর থেকে একটি ট্রলার ভাড়া করি। ট্রলারটি ঈশ্বরকাঠি এলাকায় পৌছলে তেল শেষ হয়ে যায়। তখন ড্রাইভার আমাদের ট্ররারে বসিয়ে রেখে বাজারে যান তেল কিনতে। এর কয়েক মিনিট পরেই নদী ভাঙ্গনের কবলে পরে ট্রলারটি ডুবে যায়। আমি সহ ১৩ জন নারী পুরুষ আমরা কোন রকমে সাতার কেটে পাড়ে উঠি। কিন্তু তিনজনকে এখনো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা।

নিখোঁজ শিরিয়া বেগমের ছেলে সেলিম আকন বলেন, আমার মা ওই পীরের মুরদি ছিলেন। আমাদের গ্রামের অনেকেই সেখানকার মুরিদ। বুধবার রাতে ওরশে যাওয়ার পর থেকে মায়ের সাথে আর কোন যোগাযোগ হয়নি। সকালে জানতে পারি ডুবে যাওয়া ট্রলারটিতে আমার মাও ছিলেন। কিন্তু তাকে এখনো পাওয়া যাচ্ছে না। আমি সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই, যে কোন উপায়েই হোক নিখোঁজদের যেন উদ্ধার করে আমাদের কাছে পৌছে দেন।

নড়িয়া সুরেশ্বর নৌ পুলিশের কর্মকর্তা মো. মাসুম মিয়া বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের নিয়ে আমরা সম্ভাব্য সকল পয়েন্টে খোঁজ করছি। চাঁদপুর, মাওয়া ও শীবচর নৌ পুলিশকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তারাও নিখোঁজদের উদ্ধারে সম্ভাব্য সকল চেষাটা চালিয়ে যাচেছন।

(কেএনআই/এএস/আগস্ট ১০, ২০১৭)