ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদীর মুলাডুলি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় রূপভান শিমের ক্ষেত-খামার ফুলে ফুলে ভরে গেছে। দেশের অন্যতম প্রধান শিম উৎপাদনকারি এলাকা হিসেবে ঈশ্বরদী পরিচিত। এখানকার আগাম শিমের জাত রূপভান শিম চাষ করে এলাকার কৃষকরা বিগত এক দশকেরও বেশী সময়ে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন। ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে এই এলাকার কৃষক ও দিনমজুর।

কৃষকরা ইতোমধ্যেই শিম তুলে বাজারজাত করতে শুরু করেছেন। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আবাদকৃত শিমে ফুল এক অপরূপ দৃশ্যের অবতারণা করেছে। সেই সাথে এলাকা জুড়ে শিমের ফুলের ঘ্রাণে অন্যরকম পরিবেশ বিরাজ করছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রওশন জামাল জানান, গত বছর ১,৪০০ হেক্টর জমিতে শিমে আবাদ হয়েছিল। এবারে ১,৫০০ হেক্টর জমিতে শিম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করা হয়েছে। এরমধ্যে আগাম রূপভান শিমের চাষের দিকে কৃষকদের আগ্রহ বেশী বলে তিনি জানান। প্রথম দিকে বাজারে শিমের দাম বেশী থাকায় কৃষকদের লাভ অনেক বেশী হয় বলে এখানে এখন রূপভান শিমের আবাদই বেশী হচ্ছে।

পতিরাজপুর গ্রামের আলহাজ্ব আব্দুল মজিদ শেখের পুত্র আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল হাকিম শেখ তার খামারে রূপভান শিমের আবাদ করেছেন। তার খামারে ‘রূপভানের’ ফুলে ফুলে ভরে গেছে । পাঁচ বিঘা জমিতে শিমের আবাদ হতে তিনি ইতোমধ্যেই দুই লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছেন বলে জানান। খামারে তাকালে শুধুই শিমের সমারোহ চোখে পড়ে। হাকিম বলেন, ৩ হাজার ৫ শত টাকা মন দরে তার আগাম লাগানো ৫ বিঘা জমি হতে প্রায় ২ লাখ টাকার ‘রূপভান’ শিম এরমধ্যে বাজারে বিক্রি করেছেন।

উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছ। তাই কৃষকরা এখন ‘রূপভান’ শিমের মরা ফুল বাছাই ও ফুল রক্ষার কাজে মহাব্যস্ত। নারী পুরুষ শিমের ক্ষেতে ফুল ও ফলের পরিচর্যায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন। তবে অতি বৃষ্টিতে অনেক ফুল শিম গাছ হতে ঝড়ে পড়েছে। তা নাহলে আরও বেশি শিম উঠিয়ে বাজারে বিক্রি করা যেত।

তিনি আরও বলেন, সহজ শর্তে কোন ব্যাংক-বিমা কিংবা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঋণ প্রদান করলে খামারটি আরও বেশি প্রসারিত করতে চাই। তিনি বলেন, এই এলাকার বেকার যুবকরা চাকরি নামের সোনার হরিণের পেছনে না ছুটে এখন কৃষি খামার করে স্বাবলম্বি হওয়ার জন্য কৃষিকাজের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।

(এসকেকে/এসপি/আগস্ট ১২, ২০১৭)